আজ সকাল থেকে তারকেশ্বর রেল (Local Train) স্টেশনে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আজ (রবিবার) ভোর থেকে দুপুর ১১ টা পর্যন্ত হাওড়া-তারকেশ্বর শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আর এ কারণে যাত্রীরা পড়েছেন এক বড় বিপদে। অনেকেই যাত্রা করতে এসে টিকিট কাউন্টার বন্ধ দেখে হতবাক, কিছু জানতেন না আগেভাগে। ট্রেন বাতিলের বিষয়ে পূর্ব রেলের (Local Train) ঘোষণা পৌঁছায়নি অনেকের কাছে, যার ফলে তাঁদের পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে ভণ্ডুল হয়ে গেছে।
বিশেষভাবে, যেসব যাত্রীরা সকাল সকাল স্টেশনে (Local Train) এসে ট্রেন ধরতে চেয়েছিলেন, তাঁদের জন্য দিনের শুরুটা ছিল একদমই অপ্রত্যাশিত। কারও পরিকল্পনা ছিল কলকাতায় চিকিৎসা করতে যাওয়ার, কেউ বা ব্যবসার প্রয়োজনে হাওড়ায় যাচ্ছিলেন, আবার অনেকে ছিলেন সপরিবারে ঘুরতে যাওয়ার জন্য। কিন্তু, ট্রেন বাতিলের খবর জানার পর তাঁদের সবার পরিকল্পনা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গতকাল রাত থেকে পূর্ব রেলের (Local Train) তরফে জানানো হয়েছিল, সিঙ্গুর নসিবপুর এবং দিয়ারা নসিবপুর স্টেশনের মাঝে দুটি রেল ব্রিজ পুনর্নির্মাণের কাজ চলবে, যার কারণে তারকেশ্বর হাওড়া শাখার একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ৩:৫০ থেকে ১১:১৫ পর্যন্ত হাওড়া-তারকেশ্বর ডাউন লাইনে ২৫টি ট্রেন বাতিল করা হয়। আপ লাইনে একইভাবে ভোর ৪:০৫ থেকে সকাল ৯:০৫ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়। যার ফলে হাওড়া, কলকাতা, আরামবাগ এবং অন্যান্য স্টেশনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগকারী বহু ট্রেনই বাতিল হয়ে যায়।
এই অবস্থায়, অনেক যাত্রীই আসেন টিকিট কাটতে, কিন্তু কাউন্টার বন্ধ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যান। তবে, সকাল ৮টার পর টিকিট দেওয়া শুরু হলেও যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ ছিলই। যাত্রীরা জানতে পারেন যে, তারকেশ্বর থেকে হাওড়া যাওয়ার প্রথম ট্রেন ৯:৩২ নাগাদ ছাড়বে। এক যাত্রী বলেন, “খুবই সমস্যা। টিকিট কাটতে গিয়ে জানতে পারি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। কী আর করা যাবে! ভোগান্তি হলেও এখন অন্য ট্রেন ধরে যেতে হবে।”
এদিকে, যাত্রীরা রেল কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, কারণ সঠিক সময়ে খবর না দেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেক যাত্রী বলেন, “আমরা যদি আগেই জানতাম, তাহলে হয়তো অন্য কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারতাম।” তবে, বেশিরভাগ যাত্রীই শেষমেশ ধৈর্য্য ধরে, অপেক্ষা করে আবার নতুন করে ট্রেন ধরার চেষ্টা করছেন।
এমন পরিস্থিতি মেনে নেওয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে যাদের জরুরি কাজে ট্রেন ধরতে হবে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যথাসম্ভব পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তবুও যাত্রীদের অভিযোগ অব্যাহত। যাত্রীদের দাবি, এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি আরও আগে জানানো উচিত ছিল, যাতে তাঁরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন।
আজকের এই পরিস্থিতি মনে করিয়ে দেয় যে, কখনো কখনো ট্রেন চলাচলের শিডিউল ও বাতিলের খবর না জানালে কতটা বিপদে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত, যাত্রীদের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হতে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সময়মতো পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।