এই ক্রিকেটার নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব (New Zealand cricket) করেছেন কিন্তু আজ তিনি সামান্য একজন ট্যাক্সি চালক। বর্তমানে ক্রিকেট প্লেয়ারের বর্তমানে আয়ের একাধিক উৎস থাকে। দেশের জার্সিতে নামার সুযোগ না হলেও ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও প্রচুর অর্থ আয় করে থাকেন বর্তমান সময়ের প্লেয়াররা। এছাড়া আইপিএল ও অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো তো রয়েইছে।
কিন্তু এই ছবিটা কিন্তু সবসময়ের জন্য এক ছিল না। বিশেষ করে ষাট ও সত্তরের দশকের ক্রিকেটারদের জন্য পরিস্থিতি অনেকটাই জটিল ছিল। ভারতেও সেই সময়কার অনেক প্লেয়ারই এখন জীবিকা নির্বাহ করতে অন্যান্য কোন কাজ করছেন। কারণ বোর্ডের পেনশনে সংসার চালানো সত্যিই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় মাঝে মাঝে।
আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনে তেমনই এক প্রাক্তন ক্রিকেটারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি অবশ্য ভারতের নয়। তিনি নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউয়িন চ্যাটফিল্ড। আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত এই মানুষটিকে চিনবেন না। কিন্তু এঁনার ঝুলিতে রয়েছে ৪৩টি টেস্ট ও ১১৪টি ওয়ান ডে ম্যাচে অংশগ্রহণ করার স্মৃতি।
শুধুমাত্র এখানেই শেষ নয় নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে তিনি ৩টি বিশ্বকাপেও খেলেছেন। ৭৪ বছরের প্রাক্তন কিউয়ি পেসার বর্তমানে ট্যাক্সি চালান নিউজিল্যান্ডের রাস্তায়। ১৯৭৫-১৯৮৯ সালের মধ্যে নিউজিল্যান্ড দলের জার্সিতে খেলেছিলেন চ্যাটফিল্ড। তিনি বলছেন, ”আমি একটা ঠিকঠাক চাকরি খুঁজছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম ট্যাক্সি চালানোটা আমার কাছে অনেক বেশি সহজ।
ইউয়িন চ্যাটফিল্ড ১৯৭৯, ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন। ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে দুর্দান্ত বোলার ছিলেন তিনি। লাইন লেংথ নিঁখুত রেখে বল করে যেতেন একটানা। ১১৪ ওয়ান ডে ম্য়াচে মোট ১৪০ উইকেট নিয়েছিলেন চ্যাটফিল্ড। ইকনমি রেট ছিল বেশ ঈর্ষণীয় ৩.৫৭। নিজের অভিষেক টেস্টেই বাউন্সারে মারাত্মকভাবে আঘাত পেয়েছিলেন ব্যাট করতে নেমে।
কিন্তু এরপরও টেস্টে ৪৩ ম্য়াচ খেলে ১২৩ উইকেট ঝুলিতে পুরেছিলেন। তবে এত বড় মাপের ক্রিকেটারকেও বর্তমানে সংসার চালাতে ট্যাক্সি চালাতে হচ্ছে। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলিকে যেমন বর্তমানে প্রবল আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।১৫ হাজার টাকা খরচ মেটাতে পারেননি বলে তাঁর ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছে কাম্বলির থেকে।
সারা পৃথিবী জুড়ে হয়তো আরও এরকম অনেক ক্রিকেটার আছে যারা হয়তো একদিন দেশকে সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছে দিতে পেরেছিলেন। কিন্তু আজ তারা আমাদের সবার চোখের আড়ালে চলে গেছেন। সংসার চালাতে হয়তো এমন কোন কাজে তিনি নিযুক্ত রয়েছেন যা হয়তো আমাদের চোখে নিতান্তই সামান্য। কিন্তু তবুও তিনি সেই কাজে খুশি।