দিল্লি পৌরসভা মেয়র নির্বাচনের আগে আরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আম আদমি পার্টির জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে চলেছে। তিনজন আপ কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, যা বিজেপির জন্য এক বড় সুবিধা তৈরি করেছে।
এই তিন কাউন্সিলর হলেন অ্যানিতা বসোয়া (অ্যান্ড্রু্সগঞ্জ), নিখিল চপ্রানা (হরি নগর) এবং ধর্মবীর (আর কে পুরাম)। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিশাল জয়ের পর তারা বিজেপিতে যোগদান করল। দিল্লি বিজেপি প্রধান ভিরেন্দ্র সাচদেবা এক প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, “দিল্লি এখন ‘ট্রিপল ইঞ্জিন’ সরকার পাবে – কেন্দ্রে, রাজ্যে এবং পৌরসভার স্তরে, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বিকসিত ভারত’ ভিশন অনুযায়ী উন্নত করা হবে।”
আপ এবং বিজেপির মধ্যে চাপের পারদ বাড়ছে
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত শেষ মেয়র নির্বাচনে, আপ তিন ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল। তবে এখন বিজেপি ৩ জন কাউন্সিলর যোগ হওয়ার ফলে তাদের মেয়র নির্বাচনে সম্ভাবনা অনেকটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিজেপির ভোট সংখ্যা আপ এর থেকে বেশী, ফলে এই নির্বাচনে বিজেপির জয়ী হওয়া আরও নিশ্চিত মনে হচ্ছে।
ভারতীয় জনতা পার্টির নেতারা বলেছেন, তারা দিল্লিকে আরও পরিষ্কার ও সুন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চান। সাচদেবা আরও উল্লেখ করেছেন, “এটি দিল্লির উন্নতির জন্য আমাদের এক নতুন উদ্যোগ এবং এই সিদ্ধান্ত থেকে নগর উন্নয়নের এক নতুন যুগ শুরু হবে।”
দিল্লি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন মেয়র নির্বাচন এবং ভোটার তালিকা
দিল্লি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। গত নির্বাচনগুলোতে সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ১৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল। ১০৪টি আসনে জয়ী হয় বিজেপি এবং কংগ্রেস পায় ৯টি আসন। বিজেপির ৩ কাউন্সিলরের যোগদানে, তাদের ভোট সংখ্যা এখন অনেকটাই বেড়েছে। নির্বাচনে যোগ্য ভোটাররা হলেন দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনের বিজেপি সাংসদ, তিনটি রাজ্যসভার সাংসদ (যারা আপ দলের সদস্য) এবং ১৪ জন মনোনীত বিধায়ক।
অন্যদিকে, দিল্লি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বৃহস্পতিবার ১৭,০০০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছে, যার মধ্যে স্যানিটেশন খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, ৪,৯০৭.১১ কোটি টাকা। এছাড়াও নগর অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক তরজার মধ্যে বাজেট ঘোষণা
দিল্লি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বাজেটে স্যানিটেশন, অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দিল্লির মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই পরিবর্তনগুলি এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিক থেকে অনেক গুরুত্ব বহন করছে।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। একদিকে বিজেপির এই নতুন জয়-যাত্রা, অন্যদিকে কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আপ দলের জন্য কঠিন সময়। আগামী মাসগুলোতে এটি পরিষ্কার হয়ে যাবে, কে আসলেই দিল্লির মেয়র হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে।