বিধাননগর পুলিশ গত বৃহস্পতিবার এক ৩২ বছর বয়সী বাংলাদেশি মহিলা, সাহানা সাদিককে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, মহিলাটি ভারতীয় সীমান্ত পার করে মেডিকেল ভিসায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে একাধিক পুরুষের সঙ্গে ভূয়ো বিয়ে করে প্রতারণা চালাতো। তার কৌশল ছিল, বিয়ের পর ওই পুরুষদের বিরুদ্ধে নির্যাতন বা পারিবারিক সহিংসতার মামলা দায়ের করে ব্ল্যাকমেইল করতেন।
পুলিশ সুত্র খবর, সাহানা সাদিক গত চার বছরে অন্তত ছয়বার ভারত সফর করেছে এবং বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে চারটি ভুয়ো বিয়ে করেছে। কিন্তু এসব বিয়ে কোনো আইনি রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। প্রতিটি বিয়ের পর সে ওই পুরুষদের বিরুদ্ধে রাজারহাট ও নিউ টাউন এলাকায় পারিবারিক সহিংসতার মামলা দায়ের করে, তাদেরকে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতো।
গত অক্টোবর ২০২৪ সালে, সাহানা তার শেষ বিয়ের পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে, দাবি করে যে তার স্বামী তার কিছু আপত্তিকর ছবি তুলেছে এবং সেগুলো প্রকাশ করার হুমকি দিচ্ছে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশ তার পিছনে একটি পরিচিতি খুঁজে পায়। ওই পুরুষের বিরুদ্ধে পূর্বেও একই ধরনের অভিযোগ দায়ের করেছিল সাহানা, এবং পুলিশের তদন্তে সে একটি প্রতারক হিসেবেই পরিচিতি লাভ করে।
বিধাননগর পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, “প্রথমে আমাদের কাছে তার অভিযোগটি নিছক একটা পারিবারিক বিরোধের মতো মনে হয়েছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অতীতে একই ধরনের অভিযোগ থাকায় আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এরপরই তার প্রতারণার কাহিনী সামনে আসে।”
এমন ঘটনা কোনো একক ঘটনা নয়। এর আগেও সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে, উড়িষ্যা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আরেক প্রতারক, যার নাম বিরঞ্চি নারায়ণ নাথ। তিনি বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক নারীকে বিয়ে করে, তাদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতেন। তিনি কখনও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মকর্তা, কখনও রেলওয়ে কর্মকর্তা, কখনও আবার আয়কর কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচিত দিতেন। নাথের প্রতারণার শিকার বেশিরভাগ নারী ছিলেন পেশাগতভাবে সফল, অবিবাহিত বা বিধবা।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, “নাথ বিভিন্ন ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজতেন এবং সেগুলোর মাধ্যমে তার প্রতারণার জাল বিস্তার করতেন।” তার বিরুদ্ধে একাধিক রাজ্যে মামলা দায়ের হয়েছে এবং তদন্ত এখনও চলমান।