Bangladesh: হাসিনার ‘আয়না ঘরে’ ইউনূস! কুখ্যাত গুমঘর ঘুরে শিউরে উঠলেন তিনি

ঢাকা: হাসিনা জমানায় অন্যতম অন্ধকারময় অধ্যায় হল আয়নাঘর৷ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি তাঁর অপছন্দের লোকদের আয়নাঘর নামক এই কালকুঠুরিতে বন্দি করে রাখতেন৷…

ঢাকা: হাসিনা জমানায় অন্যতম অন্ধকারময় অধ্যায় হল আয়নাঘর৷ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি তাঁর অপছন্দের লোকদের আয়নাঘর নামক এই কালকুঠুরিতে বন্দি করে রাখতেন৷ সেখানে চলত নির্মম অত্যাচার৷ গত অগাস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনের জোয়ারে গদিচ্যুত হন শেষ হাসিনা৷ এর পরই আয়নাঘরের রহস্য সবার সামনে আনবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। বুধবার সশরীরে সেই আয়নাঘরে হাজির হলেন ইউনূস। সেখানে গিয়ে রীতিমতো চমকে উঠলেন তিনি৷

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস বুধবার ঢাকায় আয়না ঘর পরিদর্শনে যান। যাকে নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন কক্ষ বা টর্চার সেলও বলা হয়ে থাকে। শেখ হাসিনার জমানায় বিরোধীদের ধরে নিয়ে এই টর্চার সেলে ভরে রাখা হত বলেই অভিযোগ। এদিন ইউনূসের আয়না ঘর পরিদর্শনকে পরিকল্পিত নাটক বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লিগ৷ তাদের দাবি, শেখ হাসিনার সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে এটা পরিকল্পিত অপপ্রচার৷  

   

বাংলাদেশে আয়নাঘর নিয়ে বিভিন্ন মহলে বহু চর্চা হয়েছে। এই আয়নাঘর নিয়ে রহস্যেরও অন্ত নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিবেদনে এই আয়নাঘরের হাড়হিম ঘটনার কথা সামনে এসেছে। বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা, আয়নাঘরে বন্দি থাকা কিছু ব্যক্তি ও সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে ঢাকার তিনটি বন্দিশালায় যান মহম্মদ ইউনূস৷ এই গুমঘরগুলি এতদিন লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিল। আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরায় অবস্থিত তিনটি আয়নাঘর পরিদর্শন করেন তাঁরা৷ ছোট্ট কুঠুরিগুলি ঘুরে দেখেন, যেখানে এক সময় হাসিনা বিরোধীদের বন্দি করে রাখা হত। কীভাবে সেখানে বন্দিদের উপর অত্যাচার চলত, সেই কাহিনীও শোনেন ইউনূস।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়নাঘরের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিয়ো শেয়ার করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, জেলের মতো ছোট ছোট কুঠুরি, তাতে একটা জানালাও নেই। ঘরের মাঝখানে একটি করে চেয়ার৷ এই চেয়ারে বসিয়েই বন্দিদের উপর চলত অত্যাচার। সাদঘরে থাকা বন্দিরা দেওয়ালে তাদের কষ্টের কথা লিখে গিয়ছে৷ লিখেছেন তাঁদের অপেক্ষার কথা৷ 

আয়নাঘর দেখে বেরিয়ে আসার পর ইউনূস বলেন, “আইয়ামে জাহেলিয়া বলে একটা কথা আছে, বাংলাদেশের বিগত সরকার সেই আইয়ামে জাহেলিয়ারই প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছে। এটা তারই প্রমাণ।” তিনি আরও বলেন, “এইসব কালকুঠুরিতে নৃশংস কর্মকাণ্ড হয়েছে৷ যতই শুনছি, ততই অবিশ্বাস্য লাগছে। এটা কি আমাদের জগৎ, আমাদের সমাজ? যাঁরা নিগৃহীত হয়েছেন, তাঁদের মুখ থেকেই সব শুনলাম। এখানে যা হয়েছে, তার কোনো ব্যাখ্যা নেই।”

তাঁর কথায়, “বিনা দোষে, বিনা কারণে এখানে তুলে আনা হত। সন্ত্রাসবাদী, জঙ্গি বলে ঢুকিয়ে দেওয়া হত। এই রকম টর্চার সেল দেশজুড়ে আছে। মোট সংখ্যাটা এখনও আমাদের জানা নেই।”

আয়নাঘরের কালকুঠুরিগুলি দেখার পর, সেগুলি মুরগির খাঁচার থেকেও ছোট বলে উল্লেখ করেন মহম্মদ ইউনূস। বলেন, “একজন বলছিলেন খুপরির মধ্যে রাখা বন্দি করে রাখা হয়েছে। এর থেকে তো মুরগির খাঁচাও বড় হয়।’’