ট্রাম্পের নয়া শুল্ক নীতি, মোদীর ওয়াশিংটন সফরে উত্তেজনা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বর্তমানে দু’দিনের সফরে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন (Modi in US Latest Update)। এই সফরের মধ্যে দিয়ে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয় উত্থাপিত হতে…

Tensions Rise Over Trump’s Tariff Policy During Washington Visit

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বর্তমানে দু’দিনের সফরে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন (Modi in US Latest Update)। এই সফরের মধ্যে দিয়ে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয় উত্থাপিত হতে পারে। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে মোদীর এই সফর নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই তিনি পালটা শুল্ক আরোপের ঘোষণা করতে পারেন। এটি ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে যেসব দেশ আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে থাকে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি আজ অথবা আগামীকাল পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করব।’ তার মতে, আমেরিকার সুরক্ষা এবং কর্মসংস্থানের জন্য এটি প্রয়োজনীয়। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, অনেক দেশ দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকাকে বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এখন আমেরিকার পক্ষ থেকে পালটা শুল্ক আরোপ করা উচিত।

   

মোদী যখন আমেরিকায় রয়েছেন, তখনই ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যা ভারতের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নতুন নয়। তিনি নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য তিনি শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন।

মোদী সরকারও এরই মধ্যে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। গত বছর আমেরিকা থেকে শক্তি সংক্রান্ত পণ্য কেনার জন্য ভারত আরও আগ্রহী হয়েছে। ভারতীয় সরকারও আমেরিকার শুল্ক কমানোর জন্য কাজ করেছে এবং এমনকি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনাও আলোচনা করেছে। এসব পদক্ষেপের ফলে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা মসৃণ হতে পারে।

তবে, ট্রাম্পের পালটা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পেছনে একটি বড় কারণ রয়েছে। ট্রাম্প মনে করেন, আমেরিকার কর্মীরা এই নীতির কারণে লাভবান হবে। এর ফলে আমেরিকার জাতীয় সুরক্ষা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশটি বাণিজ্যিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে। তার মতে, যেভাবে অন্য দেশগুলো আমেরিকা থেকে পণ্য আমদানি করে, তেমনই আমেরিকা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারবে।

মোদী ও ট্রাম্পের সম্পর্ক কেমন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে প্রথম বৈঠক বৃহস্পতিবার সকালে হবে, এবং তারপর সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে তাদের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে বিভিন্ন মতপার্থক্য সমাধান হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের অনেক দিক রয়েছে এবং উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এই সফর গুরুত্বপূর্ণ। মোদী এবং ট্রাম্পের আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়েও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে, এই সফরকে ঘিরে কিছু সমস্যা এবং অনিশ্চয়তা থাকলেও, মোদী আশা করছেন যে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সুষ্ঠু আলোচনা হবে।

নিঃসন্দেহে, ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হতে পারে। তবে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ভারতীয় পণ্যগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, এবং এটি ভারতের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে। সুতরাং, এই সফর ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে শুল্ক নীতির ফলে তা কিছুটা জটিলও হতে পারে।