মধুপুর স্টেশনে হঠাৎ ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক রেলকর্মী। মঙ্গলবারের এই ঘটনা পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের মধুপুর স্টেশনে ঘটে। মৃত রেলকর্মী সুভাষ মণ্ডল ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন বিভাগের কর্মী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানানো যায় যে, মধুপুর স্টেশনে ডাউন দিল্লি-গোড্ডা এক্সপ্রেস আসার পর ট্রেনটির যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। এর পরেই সুভাষ মণ্ডল এস-৬ কোচের নিচে যান পরীক্ষা করতে। তিনি তখন কোচের ত্রুটি খতিয়ে দেখছিলেন। হঠাৎ করেই ট্রেনটি ছেড়ে দেয়, এবং তিনি যখন প্ল্যাটফর্মে ওঠার চেষ্টা করছিলেন, তখন প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের মধ্যে পিষে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে স্টেশন কর্মীরা এসে প্ল্যাটফর্মের ধার ভেঙে তাঁর দেহ উদ্ধার করেন।
সুভাষ মণ্ডলের মৃত্যুতে রেলকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রেলের কর্মীরা দাবি করেছেন, রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল, এবং এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, এটি প্রথম ঘটনা নয়, এর আগেও রেলকর্মীরা একইভাবে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন, কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ কখনোই যথাযথ সতর্কতা নেয়নি।
২০১৮ সালে আন্দুল এলাকায়ও এ ধরনের এক দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে রেলকর্মী এক কোচ পরীক্ষা করার সময় ট্রেনের নিচে পিষে মারা যান। সেই সময়ও রেল কর্মীদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল, কিন্তু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এবারও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার পর, রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রেলকর্মীরা আবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনায় রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর কঠোর প্রশ্ন উঠেছে। রেলকর্মীরা জানাচ্ছেন, যে সময়ে কর্মীরা ট্রেনের কোচ পরীক্ষা করেন, সেই সময়ে ট্রেনটি কেন ছেড়ে দেওয়া হয়, সেটা একেবারে অবাস্তব। কর্মীদের মতে, এটি একটি বড় গাফিলতি, যার ফলস্বরূপ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
রেল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে, তবে কর্মীদের দাবি, যদি সঠিকভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হত, তাহলে আজকের এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হত। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, তার জন্য রেলকে আরও সতর্ক হতে হবে, এমনটাই বলছেন রেলকর্মীরা।