গ্রামীণ কর্মসংস্থানে বিপুল বৃদ্ধির লক্ষ্যে মমতার নয়া উদ্যোগ

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছে। রাজ্য বাজেটের মাধ্যমে মমতা প্রমাণ করেছেন যে, তার সরকারের মূল…

Mamata Banerjee Prioritizes Village Development in West Bengal Budget

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছে। রাজ্য বাজেটের মাধ্যমে মমতা প্রমাণ করেছেন যে, তার সরকারের মূল লক্ষ্য হল গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এবার বাজেটে বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়ন, বন্যা প্রতিরোধ এবং আরও বেশি মানুষের জন্য সরকারী সুবিধা প্রদানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

২০২৫ সালের বাজেটে সবচেয়ে বড় ঘোষণা ছিল গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। এর মধ্যে ৩৭ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি এবং সংস্কারের কাজ অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন যথাযথ হয়নি, অনেক সময় পঞ্চায়েত বা স্থানীয় ঠিকাদারদের গাফিলতিতে রাস্তাঘাট ঠিকভাবে মেরামত হয় না। সেই সমস্যা সমাধানে এবার রাজ্য সরকার একযোগভাবে কাজ করছে। গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত উন্নয়ন কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষের যাতায়াত সহজ হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।

   

রাজ্য সরকারের ‘নদী বন্ধন’ প্রকল্পের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চলতি বছর রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পর, একই ধরনের বিপর্যয় এড়াতে নদী সংক্রান্ত উন্নয়ন এবং বন্যা প্রতিরোধে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র বন্যা রোধ করবে না, পাশাপাশি এই প্রকল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।

বন্যা এবং জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে একটি বড় সমস্যা ছিল। বিশেষ করে ঘাটালবাসী বহু বছর ধরে এই সমস্যা সহ্য করে আসছে। তাই, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য নতুন করে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই ৩৪০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে এবং আগামী দুই বছরে এই প্রকল্পে আরও অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হবে।

এছাড়াও, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় আগামী বছর ১৬ লক্ষ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আরো ১৬ লক্ষ মানুষ সরকারের সুবিধাভোগীর তালিকায় আসবেন। এই পদক্ষেপটি রাজ্যের গরিব এবং মন্দভাবে আর্থিক অবস্থানে থাকা মানুষের জন্য বড় একটি সাহায্য হয়ে দাঁড়াবে।

রাজ্য সরকার আরও ঘোষণা করেছে, আগামী দিনে সাড়ে ৩০০ সুফল বাংলার স্টল রাজ্যজুড়ে খোলা হবে, যেখানে গ্রামীণ মানুষের কাছে কম দামে সবজি এবং আনাজ সরবরাহ করা হবে। এই পদক্ষেপটি গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য একটি বড় সুবিধা হবে, বিশেষ করে যারা বাজারের উচ্চমূল্য থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হন।

এভাবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য বাজেটে গ্রামীণ জনগণের উন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ বাজেটটি প্রমাণ করেছে যে, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ ভোটারদের দিকে বিশেষ নজর রেখে সরকার কাজ করছে এবং আগামী দিনে আরও মানুষের কল্যাণে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।