মাস্টারস্ট্রোক মাস্টারপ্ল্যানে বরাদ্দ হল ৫০০ কোটি

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে অবশেষে ধোঁয়াশার মেঘ কাটলো। এদিন মমতা সরকারের তৃতীয় বাজেট পেশ হল বিধানসভাতে, আর তাতেই অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানে ৫০০ কোটি টাকা…

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে অবশেষে ধোঁয়াশার মেঘ কাটলো। এদিন মমতা সরকারের তৃতীয় বাজেট পেশ হল বিধানসভাতে, আর তাতেই অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। আগামী ২ বছরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ভরসা না রেখে এবারে নিজের কাঁধেই দায়িত্ব তুলে নিয়েছে রাজ্যসরকার। এবারের বাজেটে নদীমাতৃক এলাকার মানুষজনের কর্মসংস্থানের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২০০ কোটি। এছাড়াও তিনি যদি ভাঙ্গনকেও গুরুত্ব দিয়েছেন এই বাজেটে। নদীভাঙনের সমস্যার সমাধানের জন্য তিনি ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।

বছরের পর বছর বানভাসি হওয়ায় বিপদে পড়েন ঘাটাল এলাকার মানুষ, এমনকি ঘরছাড়া হতে হয় প্রচুর মানুষকে। এবারের বাজেটে তাই এই প্রকল্পকে সামনে রেখে অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণা। শিলাবতী, ঝুমি ও কংসাবতী নদীর জল বেড়ে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আবার রূপনারায়ণ দিয়ে সেই জল বেরিয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জল নেমে গেলে আবার বিষধর সাপের ভয়ে দিন কাটান এলাকাবাসী এই কথা মাথায় রেখে নদীর মধ্যে সংযোগ ঘটানোর উদ্দেশেই এই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান।

   

আজ থেকে প্রায় ৩৯ বছর আগে পরিকল্পনা করা হয় এই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের। পাঁচের দশকে প্রথম এই প্লানের কথা শোনে ঘাটালবাসি। ১৯৫৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের মানসিংহ কমিটি বন্যা দুর্গত এলাকা পরিষদর্শন করেন। তারপর বিভিন্ন কারণে থমকে যায় এই প্রকল্প। তারপর কেটে গেছে অনেকগুলো বছর ১৯৮৩ সালে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তৎকালীন সেচ মন্ত্রী প্রভাস রায়। শিলান্যাস নামেই তারপর আবারো থমকে যায় এই প্রকল্প। আবার ১৯৯৩ সাল, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি গঠন করে এলাকার মানুষ কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নদী গুলিকে নিয়মিত ড্রেজিং করা এবং যদি বাঁধ কে মজবুত করা যাতে বানভাসি হয়ে এলাকার মানুষের দুর্গতি না বাড়ে। তার সাথে পাম্প হাউস, সাথে বাঁধ ও খাল সংস্কার। কেন্দ্রীয় সরকারের গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিটি এই প্রকল্পকে স্বীকৃতিও দেয়। প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২,২০০ কোটি এবং তারপর ফ্লাড কন্ট্রোল কমিটির হস্তক্ষেপে তা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ১২৪০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ ভার নেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কিন্তু সেরকম কোনো উদ্যোগ আসেনি সরকারের তরফ থেকে। তাই এই তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ বাজেটে রাজ্য সরকার এই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে হয়েছে এবং ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবার কি তাহলে এই বাজের পরে হাসি ফুটবে ঘাটালবাসীর মুখে তা সময় বলবে।