লন্ডন: আমেরিকার পথে পা বাড়ল ব্রিটেন। এবার সে দেশে থাকা অবৈধবাসীদের শনাক্ত করতে এবং ধরতে তৎপরতা দেখা গেল কিয়ের স্টার্মারের লেবার সরকার। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে তারা। এই অভিযানে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা হচ্ছে ভারতীয় রেস্তোরাঁ, দোকান, নেল বার এবং গাড়ি পরিষ্কার করার দোকানগুলিতে, যেখানে অধিকাংশ অবৈধ অভিবাসীরা কাজ করে থাকেন। ব্রিটিশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জুলাই মাসে লেবার পার্টির ক্ষমতায় আসার পর ১৯,০০০ অবৈধ অভিবাসী, স্বীকৃতি বিহীন আশ্রয়প্রার্থী, বিদেশী অপরাধী ও অভিবাসন আইন ভঙ্গকারীদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এদিন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইউভেট কুপারের সচিবালয়ের তরফে জানানো হয়, উত্তর ইংল্যান্ডের হামবারসাইড এলাকার একটি ভারতীয় রেস্তরাঁ থেকেই সাত জনকে অবৈধবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক চার৷
কুপার আরও জানান, তার দফতরের ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট টিম জানুয়ারি মাসে রেকর্ড সংখ্যক অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে ৮২৮টি জায়গায় অভিযান চালানো হয় এবং ৬০৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যা গত বছরের চেয়ে ৭৩ শতাংশ বেশি৷ অভিযানের সংখ্যাও ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। এসব অভিযানে বিশেষভাবে রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, টেকওয়ে এবং খাদ্য ও পানীয় শিল্পকে টার্গেট করা হয়েছে। বৈধ পরিচয়পত্রহীন শ্রমিকদের নিয়োগ করার জন্য নিয়োগকারী সংস্থা কিংবা ব্যক্তিকে ১০৯০টি নোটিস পাঠানো হয়েছে ব্রিটিশ সরকারের তরফে।
ইউভেট কুপার বলেন, “অভিবাসন নীতির প্রতি সম্মান দেখানো অত্যন্ত জরুরি। নিয়োগকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অভিবাসীদের শোষণ করে আসছে, তবে এখন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এছাড়া, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১,০৯০টি সিভিল পেনাল্টি নোটিস ইস্যু করা হয়েছে, যার ফলে অবৈধ কর্মী নিয়োগকারী নিয়োগকর্তাদের ৬০,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এদিকে, যুক্তরাজ্য সরকার একটি নতুন ইমিগ্রেশন বিলও প্রস্তাব করেছে, যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে আরও শক্তিশালী ক্ষমতা দিতে চায়। এই বিলে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন জব্দ করার ক্ষমতা দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি এই বিলে সমালোচনা করেছে। তারা দাবি করেছে, এটি দুর্বল এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর হওয়া উচিত।
ব্রিটেনের রাজনৈতিক পরিসরে ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে ‘রিফর্ম ইউকে’-র মতো দক্ষিণপন্থী দলগুলি। যারা কঠোর অভিবাসন নীতি প্রণয়নের পক্ষে। বহুমুখী চাপের মধ্যে অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষেই হাঁটতে পারে ব্রিটেনের লেবার সরকার।