রাজ্য জুড়ে অবৈধ বাজির উৎপাদন এবং বিপজ্জনক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরেও এ ধরনের বাজি তৈরির কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। গত কিছু মাসে একাধিক বাজি কারখানায় ঘটে গেছে মারাত্মক দুর্ঘটনা, তবে তার পরেও বেআইনি বাজি তৈরির কাজ চলছে প্রকাশ্যে। বিশেষত, শনিবার এক এলাকায় আবারও শব্দবাজি তৈরির ছবি দেখা গেছে, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বাজি কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে বিস্ফোরণ, আগুন লাগা এবং মানবিক ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অবৈধ বাজি তৈরির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও, কার্যকরী পদক্ষেপ এখনও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। এর ফলস্বরূপ, স্থানীয় এলাকাগুলিতে অবৈধ বাজি তৈরির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে বাজির কারখানাগুলির দিকে নজর রাখার জন্য “ক্লাস্টার” ভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্লাস্টার ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অবৈধ বাজি কারখানাগুলির বিরুদ্ধে আরও কার্যকরী হতে পারে, কারণ একাধিক কারখানা একত্রিত হলে সেই এলাকা গুলি দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হবে এবং তাদের ওপর নজরদারি চালানো সহজ হবে।
কিন্তু, বাস্তবে ক্লাস্টার ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এখনো সেভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ করে এসব অঞ্চলে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সময়মতো ব্যবস্থা নিতে পারছে না, যার ফলে অবৈধ বাজির তৈরির কাজ অব্যাহত থাকছে। সম্প্রতি যে এলাকায় শব্দবাজি তৈরির ছবি প্রকাশ পেয়েছে, তা আবারও এই অসাধু কার্যক্রমের চলমানতা প্রমাণ করে।
এছাড়া, বাজি তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন। তারা কম বেতন ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের কারখানাগুলোর মালিকরা শুধু নিজেদের লাভের জন্য শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করছেন, এবং এতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
যদিও রাজ্য সরকার এই সমস্যা সমাধানে কঠোর আইন ও নীতিমালা তৈরি করার দাবি জানিয়েছে, তবে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আরও বেশি সজাগতা ও একযোগিতার প্রয়োজন। বর্তমানে, রাজ্য জুড়ে চলমান অবৈধ বাজি তৈরি বন্ধ করতে সরকারি উদ্যোগ আরও ত্বরান্বিত হওয়া জরুরি। এদিকে, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এবং দুর্ঘটনা কমানোর জন্য আরও সামাজিক প্রচার অভিযান চালানোর প্রয়োজন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি অবিলম্বে এই ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে আগামী দিনে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাবে।