Durgapur: নেকড়েরা খুবলে দিতে পারে, কাঁকসার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ভরসা ‘ঐরাবত’

রাত হলেই নেকড়ে চোখ জ্বলতে দেখেছেন অনেকে। কামড়ে খুবলে দেওয়ার ভয়াল মুহূর্তগুলোর স্বাক্ষী অনেকে। পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুর (durgapur) ও কাঁকসা বনাঞ্চলের বিভিন্ন…

wolf scare in Durgapur

রাত হলেই নেকড়ে চোখ জ্বলতে দেখেছেন অনেকে। কামড়ে খুবলে দেওয়ার ভয়াল মুহূর্তগুলোর স্বাক্ষী অনেকে। পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুর (durgapur) ও কাঁকসা বনাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে গত কয়েকবছর ধরে নেকড়ের আনাগোনা বেড়েছে। সোমবার সেই নেকড়ে আতঙ্ক নিয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা ঘর থেকে বের হয়েছেন।

বনবিভাগ সতর্ক। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পিছনে চলেছে ‘ঐরাবত’। দুর্গাপুর রেঞ্জের বন কর্মীদের এসকর্ট করে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে দেখা গেল। তদের নিয়ে গেল ঐরাবত গাড়ি। জেলা বন দফতরের বিশেষ নজরদারি চলেছে কাঁকসার জঙ্গলমহল এলাকায়।

   

উল্লেখ্য গতবছর উত্তরবঙ্গে দাঁতাল হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। তারপর থেকে রাজ্য বন দফতর জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মতো দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়াসহ জঙ্গল লাগোয়া এলাকাতে চলছে এই নজরদারি।

পশ্চিম বর্ধমান জেলা বন দফতর জানিয়েছে, কাঁকসার জঙ্গলমহলে রয়েছে ভারতীয় প্রজাতির নেকড়ে। অত্যন্ত হিংস্র এই প্রাণী। মাস খানেক আগে বুদবুদের দেবশালা জঙ্গলে নেকড়ের আক্রমণে জখমের ঘটনা ঘটেছিল। এমন পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতে বিপদে পড়তে না হয় সেজন্য পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে বাড়তি নজরদারি শুরু করেছে বর্ধমান বন বিভাগ।

মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঐরাবত নামে বনদফতরের বিশেষ গাড়িসহ আরো কয়েকটি গাড়ি কাঁকসা বনাঞ্চলের মলানদিঘি, সরস্বতীগঞ্জ, রক্ষিতপুর, চুয়া, ত্রিলোেকচন্দ্রপুর এলাকা থেকে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যায়। তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়।

পরীক্ষার্থীরা বলেছেন,জঙ্গল পার হতে ভয়ই লাগে। তবে আজ ভয় নেই। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছে বন দফতরের কাকুরা। জেলা বনদফতরের কর্মীরা বলেছেন, শুধু বন্যপ্রাণীদের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা নয়, পরীক্ষার্থীদের দুর্ঘটনার কবলেও যাতে পড়তে না হয় সেদিকেও আমাদের নজরদারি রয়েছে। সেই জন্য আমাদের গাড়ি পিছনে রয়েছে। সামনে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। প্রয়োজনে গাড়ির সাইরেনও বাজাচ্ছি আমরা। পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেও দেওয়ার হবে আবার পরীক্ষা শেষে বাড়িতেও পৌঁছে দেওয়া হবে।

দুর্গাপুর বনাঞ্চলের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সর্বক্ষণই আমাদের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় নজরদারি চলে। পরীক্ষার দিনগুলোতে বিশেষ নজরদারি চলছে। পরীক্ষার দিনগুলি দিনভর নজরদারি চালানো হবে জঙ্গল এলাকায়”।

বিলুপ্তপ্রায় তালিকায় থাকলেও কাঁকসার বনাঞ্চলে ধূসর নেকড়ে দেখা যায়। বন দফতর জানিয়েছে, বনাঞ্চলের পরিমাণ বেড়েছে তাই ওই জন্তুর দেখা মিলছে। এলাকার বাসিন্দারা যাতে আতঙ্কিত হয়ে নেকড়ের ক্ষতি না করেন তার জন্য চলছে নজরদারি। এলাকাবাসী কিন্তু ভীত। কারণ, নেকড়ে অতি হিংস্র। জেলা বন দফতর জানিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বরের জঙ্গলে হায়নার দেখা মিলেছে।

বন দফতরের দুর্গাপুর রেঞ্জ জুড়ে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বনাঞ্চল রয়েছে। সেখানে হেরোল, শেয়াল, বনবিড়াল, গন্ধগোকুল, খরগোশ, ময়ূর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, পাখি-সহ নানা ধরনের ছোটো প্রাণীর উপস্থিতি। তবে গত কয়েক বছরে জঙ্গলের ঘনত্ব বেড়েছে। এরপর থেকে হায়না ও ধুসর নেকড়ে আসছে।