ভাঙল আত্রেয়ী নদীর বাঁধ, মমতাকে তোপ সুকান্তর

বালুরঘাটে (Balurghat) আত্রেয়ী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। রবিবার রাতে বালুরঘাট (Balurghat) পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। বাঁধের…

Atreyee River Dam Breaks, Sukanta Targets Mamata

বালুরঘাটে (Balurghat) আত্রেয়ী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। রবিবার রাতে বালুরঘাট (Balurghat) পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। বাঁধের একটি অংশ ভেঙে গিয়ে সিঁড়ি উলটে যায়, যার ফলে এলাকার বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাঁধ ভেঙে জল ঢোকার আশঙ্কায় এলাকাবাসী উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয়েছিল, যা সহজেই ভেঙে যেতে পারে। তারা দাবি করেছেন, বাঁধের নির্মাণ কাজে দুর্নীতি হয়েছে। তবে প্রশাসন বলছে, অতিরিক্ত জলের চাপে এই বিপত্তি ঘটেছে। রবিবার রাতে বাঁধে যাতায়াতের সিঁড়িটি উলটে যায়। এই ঘটনায় বাঁধের ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। তবে কীভাবে বাঁধের এত বড় ক্ষতি হল, তা এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।

   

ঘটনার খবর পেয়ে সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুলিশও সেখানে যায়। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র ঘটনাস্থলে যান। বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। সেচদপ্তরের কর্মীরা স্লুইস গেট খুলে দেন, যাতে জল কমে যায়। তবে, এমন বিপর্যয় কেন ঘটল, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। অনেকেই দাবি করেছেন, বাঁধের নির্মাণে ত্রুটি ছিল এবং এটি সঠিকভাবে নির্মাণ হয়নি।

এই বাঁধটি ২০২৩ সালে তৈরি হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেছিলেন আত্রেয়ী নদীর বাঁধ। উদ্বোধনের মাত্র কয়েকবছর পর এই ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তাদের দাবি, সঠিক নির্মাণ কাজ না হওয়ায় এমন বিপত্তি ঘটেছে। এলাকাবাসীরা আরও অভিযোগ করছেন, যদি জল গ্রামে ঢুকে যায়, তবে বড় বিপদ হতে পারে। বর্তমানে শুষ্ক মরশুম চলছে, বৃষ্টিও হয়নি অনেকদিন, তবুও বাঁধ ভেঙে গেল, এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি X হ্যান্ডেলে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়ন আর বিপর্যয় সমার্থক! বছর দুয়েক আগে বালুরঘাটে আত্রেয়ী নদীর উপর ড্যাম তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেখানেও বিপর্যয়। আকস্মিকভাবেই সেই ড্যামও ভেঙে গেল। ঘটনার পর থেকেই যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানুষজন। ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর রাজত্বে যে কায়দায় সর্বত্র প্রতিষ্ঠানিক লুট চলছে, তাতে স্পষ্ট আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের মানুষই তাঁর লুটের সরকারও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবেন।” সঙ্গে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেখেন, “এবার_যাবে_পশ্চিমবঙ্গের_পাপ।”

তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার দাবি করেছেন, প্রশাসন পরিস্থিতি নজর রাখছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করলেও, তৃণমূল সরকার এই ঘটনাকে মোকাবিলা করার জন্য দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসন পরিস্থিতি ঠিক করার চেষ্টা করছে ও স্থানীয়দের আশ্বস্ত করছে। তবে, এলাকার বাসিন্দারা এখনও উদ্বিগ্ন। তারা চান, দ্রুত সমস্যা সমাধান হোক যাতে আর কোনও বিপর্যয় না ঘটে।

এই ঘটনায় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, নদীর বাঁধ তৈরি করতে এত বড় ত্রুটি কেন ঘটল। এখনও পর্যন্ত এই বিষয়টি নিয়ে কোনো পরিষ্কার তথ্য আসেনি। তবে, প্রশাসন কাজ করছে এবং পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, সরকারের যথাযথ পদক্ষেপে তারা নিরাপদ থাকতে পারবেন।

এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলেছে। এই ধরনের বিপর্যয়ের ফলে মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। এখন দেখার বিষয় হবে, সরকার কিভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এবং স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।