লিভারপুলের হার! প্লাইমাউথের কাছে বিপর্যয়ে FA Cup থেকে বিদায়

লিভারপুলের জন্য একটি চরম হতাশাজনক দিন ছিল রবিবার, যখন তারা প্লাইমাউথ আর্গাইলের বিরুদ্ধে ১-০ ব্যবধানে হেরে এফএ কাপের (FA Cup) চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে।…

Liverpool Kicked Out Of FA Cup By Worst Championship Side

লিভারপুলের জন্য একটি চরম হতাশাজনক দিন ছিল রবিবার, যখন তারা প্লাইমাউথ আর্গাইলের বিরুদ্ধে ১-০ ব্যবধানে হেরে এফএ কাপের (FA Cup) চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে। এই পরাজয়টি লিভারপুলের কোচ আর্নে স্লটের জন্য বড় ধরনের ভুল সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ হয়েছিল। স্লট দলে ১০টি পরিবর্তন করেছিলেন এবং এটাই তাঁর দলকে ধাক্কা দিয়েছে, যার ফলস্বরূপ গর্বিত লিভারপুলকে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে দেওয়া হয়নি।

প্লাইমাউথের ঐতিহাসিক জয়
প্লাইমাউথ আর্গাইলের কাছে ১-০ গোলে হারার মাধ্যমে লিভারপুল তাদের চতুর্থ ম্যাচে হেরেছে এই মৌসুমে, এবং এটি ছিল এই মরসুমে তাদের প্রথম বড় ধাক্কা। ম্যানেজার আর্নে স্লট তার দলের মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যার মধ্যে ছিলেন ভার্জিল ভ্যান ডাইক, মোহাম্মদ সালাহ, অ্যান্ড্রু রবার্টসন, এবং কোডি গাকপো। এতে দলের খেলায় স্পষ্টভাবে প্রভাব পড়েছিল। প্লাইমাউথের রায়ান হারডি দ্বিতীয়ার্ধে একটি পেনাল্টি থেকে গোল করেন, যা শেষ পর্যন্ত লিভারপুলের জন্য বড় বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

   

স্লটের সিদ্ধান্তের ভুল প্রভাব
এটি ছিল স্লটের জন্য একটি বিরল ভুল, কারণ তাঁর অধীনে লিভারপুল এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত ফর্মে ছিল। দলটি টটেনহ্যামকে ৪-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল এবং এর পরেও লিগ কাপ সেমিফাইনালে ছিল। কিন্তু, স্লটের দলে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং পরিবর্তিত লাইনআপের কারণে দলের কোহেশন এবং শক্তি কমে গিয়েছিল। ফলস্বরূপ, তারা একটি শক্তিশালী লিভারপুল দল না হওয়ায় প্লাইমাউথের কাছে পরাজিত হয়েছে।

লিভারপুল এই ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয়, যা এই মৌসুমে তৃতীয়বার। প্রথম দুইবার তারা গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে ম্যাচে ফিরেছিল। কিন্তু এবার, প্লাইমাউথের দুর্দান্ত রক্ষণভাগ এবং হেজার্ডের দারুণ গোলকিপিং ফর্ম তাদের সাহায্য করেছে।

প্লাইমাউথের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়
প্লাইমাউথ আর্গাইলের জন্য এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক জয়, বিশেষ করে যখন তারা ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের নিচের দিকে থাকা একটি দল। তাদের কোচ মিরোন মুসলিকের কাছে এটি ছিল একটি বিশেষ মুহূর্ত, কারণ তিনি নিজে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে পালিয়ে এসে নতুন করে জীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৯২ সালে বসনিয়া থেকে পালিয়ে আসার পর, মুসলিক এখন প্লাইমাউথকে সফলভাবে পরিচালনা করছেন। তাদের এই জয় প্লাইমাউথের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আপসেটগুলির একটি হিসেবে গণ্য হবে।

পরবর্তী পদক্ষেপ এবং লিভারপুলের হতাশা
লিভারপুলের পরবর্তী ম্যাচটি আসন্ন মার্সিসাইড ডার্বি, যেখানে তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি গুডিসন পার্কে এভারটনের মুখোমুখি হবে। এটি লিভারপুলের জন্য একটি বড় সুযোগ, কারণ জয় পেলে তারা আরেকটি ৯ পয়েন্টের ব্যবধানে আর্সেনালকে পিছনে ফেলবে। লিভারপুল এখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬-তে পৌঁছেছে এবং মার্চ মাসে লিগ কাপ ফাইনালে ন্যু ক্যাসলের বিরুদ্ধে খেলবে।

প্লাইমাউথের পারফরম্যান্স এবং সমর্থকদের উল্লাস
এদিকে, প্লাইমাউথ তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি, কারণ তারা শুধু লিভারপুলকেই পরাজিত করেনি, তারা ব্রেন্টফোর্ডকে তৃতীয় রাউন্ডে পরাজিত করেছিল এবং এটি তাদের লিগের মধ্যে প্রথম জয় ছিল নভেম্বরে। এই সাফল্য তাদের জন্য অমূল্য এবং এটি তাদের ক্লাবের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন হয়ে থাকবে।

লিভারপুলের হতাশা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
লিভারপুল কোচ স্লট বলেছেন, “আমরা ভালো পারফর্ম করতে পারিনি। এমন একটি ফলাফলই সম্ভব ছিল। আমি বলতে পারি না যে খেলোয়াড়রা লড়াই করেনি, তবে ম্যাচের মধ্যে আমরা খুব কম সুযোগ সৃষ্টি করেছি এবং তারপরে একটি পেনাল্টি ছিল। এমন ম্যাচে, সব কিছু একটি মুহূর্তের উপর নির্ভর করে এবং সেই মুহূর্তটি তাদের পক্ষে ছিল, তারা এটি পাওয়ার যোগ্য ছিল।” এখন, লিভারপুলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই পরাজয়ের পর মানসিকভাবে ফিরে আসা এবং পরবর্তী ডার্বির জন্য প্রস্তুতি নেয়া।

নির্ধারিত ম্যাচ
লিভারপুলের পরবর্তী ম্যাচটি ১৫ ফেব্রুয়ারি এভারটনের বিপক্ষে গুডিসন পার্কে, যা ক্লাবটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ।

পরবর্তী ফাইনাল
লিভারপুল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬-তে রয়েছে এবং তাদের মার্চ মাসে ন্যু ক্যাসলের বিরুদ্ধে লিগ কাপ ফাইনাল রয়েছে। এখন, প্লাইমাউথের জন্য এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত, যেখানে তারা ইতিহাস গড়েছে, এবং লিভারপুলের জন্য এটি একটি হারানোর পরাজয়, যা তারা একেবারে ভুলে যেতে চায়।