২৭ বছর পর দিল্লি জয় করেছে বিজেপি। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, কে বসবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে? দিল্লি, দেশের রাজধানী হওয়ায় এই পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে এমন একজন ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিতে হবে যিনি প্রশাসন পরিচালনায় দক্ষ এবং আবার মোদি-শাহদের ছায়া থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন না। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে বিভিন্ন নেতার নাম নিয়ে চর্চা।
বিজেপি এবারও আগের মতো কাউকে মুখ হিসেবে ঘোষণা করেনি। গত নির্বাচনে ‘কেজরিওয়ালের গ্যারান্টি’য়ের বদলে বিজেপি ‘নরেন্দ্র মোদির গ্যারান্টি’কে সামনে রেখে ভোটে অংশ নিয়েছিল, যার সুফল এখন দেখা যাচ্ছে। বিজেপি এই ম্যানুেভার ব্যবহার করে নিজেদের পছন্দের কাউকে দিল্লির কুরসিতে বসাতে চায়। এখন প্রশ্ন উঠছে, সেই পছন্দের ব্যক্তি কে হতে পারেন?
এই দৌড়ে সবার আগে রয়েছেন প্রবেশ বর্মা। দিল্লির বিজেপির প্রথম সারির নেতা তিনি, এবং তাঁর ভোটে সাফল্যও কম নয়। কেজরিকে হারিয়ে ভোটে জয়লাভ করেছেন তিনি। প্রবেশের ঘনিষ্ঠরা তাকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রচার করছেন, এবং এই অবস্থায় তার সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, প্রবেশের বিপক্ষে একটি বড় ফ্যাক্টর রয়েছে, সেটি হল তার পরিবারতান্ত্রিক পরিচয়। তার বাবা, সাহিব সিং বর্মা, দিল্লির পূর্ববর্তী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, যা কিছুটা নেতিবাচক ভাবেও দেখা যেতে পারে।
আরেকজন সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হলেন বীরেন্দ্র সচদেব, যিনি রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে দলকে একের পর এক নির্বাচনী জয় এনে দিয়েছেন। তার সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং সংঘের সঙ্গে দীর্ঘ সময় যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা তাকে এই দৌড়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।
এছাড়া, দিল্লি বিধানসভার প্রাক্তন বিরোধী নেতা বিজেন্দ্র গুপ্তও এই দৌড়ে রয়েছেন। তিনি রোহিণী কেন্দ্র থেকে জিতেছেন এবং দিল্লি বিধানসভায় সীমিত শক্তি নিয়েও আপের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যুতে লড়াই করেছেন। দিল্লি বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সতীশ উপাধ্যায়েরও একটি উল্লেখযোগ্য নাম। দীর্ঘদিনের আরএসএস কর্মী তিনি, এবং তাঁর প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতাও রয়েছে।
বিজেপি এবার পাঞ্জাব ও বিহারে নজর দিতে চাইলে, পূর্বাঞ্চলী বা শিখ নেতার দিকে মনোযোগ দেওয়া হতে পারে। এই ক্ষেত্রে, মজিন্দ্র সিংহ সিরসা বা মনোজ তিওয়ারি নাম উঠে আসতে পারে।
এছাড়া, বিজেপি নারী মুখ্যমন্ত্রীও ভাবতে পারে। দিল্লি বিজেপির প্রথম সারির মহিলা নেতা রেখা গুপ্ত এই দৌড়ে থাকতে পারেন। বাইরে থেকেও স্মৃতি ইরানি বা বাঁশুরি স্বরাজের মতো নেতার নাম আলোচনায় থাকতে পারে।
মোটের ওপর, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে চমক দিতে পছন্দ করে। তাই, এই দৌড়ে এখনও পর্যন্ত যা শোনা যাচ্ছে, তাতে প্রবেশ বর্মা, সতীশ উপাধ্যায় এবং বীরেন্দ্র সচদেবের মধ্যেই মূল লড়াই হবে। তবে, যদি চমক দেওয়া হয়, তাহলে এর বাইরে অন্য কাউকেও মসনদে বসানো হতে পারে।