দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ শুরুতেই চমকপ্রদ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনকালীন সময়ে আশা ছিল, আম আদমি পার্টি (AAP) আবারও তাদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবে, তবে প্রাথমিক গণনায় কিছুটা বিপর্যয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আজ সকাল থেকেই পোস্টাল ব্যালটের গণনা শুরু হয়েছে এবং সেই গণনায় শুরুতেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। দিল্লির রাজনীতির এই উত্থান-পতন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাজ্য সরকারের ওপর মানুষের আস্থা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার-প্রতিষ্ঠা নিয়ে এখনই গঠনমূলক আলোচনা শুরু হয়ে গেছে।
গণনার শুরুতেই ১০টি আসনে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে এবং ৭টি আসনে আম আদমি পার্টি (AAP) এগিয়ে থাকার খবর এসেছে। তবে, সেই সময়েই দিল্লির বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী অতিশী বলেন, “আমরা ভরসা হারাচ্ছি না। আমরা বিশ্বাস করি গোটা দিল্লির মানুষ ভাল কাজের পাশে দাঁড়াবে।” এর মাধ্যমে তিনি দলের মনোবল রক্ষা করতে চান, কিন্তু বাস্তবতা কিছুটা আলাদা।
জানা গেছে, গণনার পরবর্তী পর্যায়ে বিজেপি ৩৮ আসনে এগিয়ে গেছে, যেখানে আম আদমি পার্টি ২৬টি আসনে এগিয়ে। কংগ্রেসের একটি আসনে এগিয়ে থাকার খবরও পাওয়া গেছে। এগিয়ে থাকার এই ফলাফল যদিও প্রাথমিক গণনা, তবুও দলের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনে কেজরীবাল এবং অতিশী পিছিয়ে থাকার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
নয়া দিল্লি আসনে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীওয়াল, যার ফলে দলের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, কালকাজি আসনে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন অতিশী, যিনি বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি দিল্লির উন্নয়নের নানা কাজের জন্য পরিচিত, কিন্তু এই নির্বাচন তাকে একটি কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে। প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, যিনি জঙ্গপুরা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তারও পিছিয়ে থাকার খবর এসেছে।
এই পরিস্থিতি দিল্লির রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের জন্য অত্যন্ত মনোযোগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি বিজেপি এই গণনায় এগিয়ে থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়, তাহলে তা রাজনৈতিক আঙিনায় বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটাবে। অন্যদিকে, আম আদমি পার্টি এই বিপর্যয়ের পরও তাদের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চেষ্টা করবে এবং আশা করা যাচ্ছে, তারা শেষ পর্যন্ত নিজেদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দেখাবে।
এই ধরনের নির্বাচন-পরিস্থিতিতে, দলের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক এবং তাদের বিশ্বাসের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। নির্বাচনের পরবর্তী ফলাফল যদি বিজেপির পক্ষে যায়, তবে তা দিল্লি তথা ভারতের রাজনীতির নতুন দিক নির্দেশ করবে। তবে এখনো অনেকটা সময় বাকি, এবং যে কোনো ফলাফলই আসতে পারে, তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের কাজের প্রতি আরও মনোযোগী হতে হবে।