মধ্যবিত্তের জন্য সুখবর, সুদের হার কমাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া পদক্ষেপ

বাজেট পর্ব মেটার পর অবশেষে ঘোষণা হল নতুন রেপো রেট। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানালেন যে, সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট…

"RBI Cuts Repo Rate by 25 BPS to 6.25%

বাজেট পর্ব মেটার পর অবশেষে ঘোষণা হল নতুন রেপো রেট। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানালেন যে, সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়েছে। এর ফলে, রেপো রেট ৬.৫ শতাংশ থেকে কমে ৬.২৫ শতাংশে দাঁড়াল। গত দুই বছর ধরে আরবিআই রেপো রেট অপরিবর্তিত রেখে চলছিল, এবং পরবর্তী সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত ২০২০ সালে নেওয়া হয়েছিল। এবার তিন বছর পর আবার সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হল।

৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যই রেপো রেট কমানোর পক্ষে মত দেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, কারণ এই পদক্ষেপ অর্থনীতির জন্য কিছুটা স্বস্তি আনতে পারে। দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি এবং জিডিপির বৃদ্ধির জন্য এরকম পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।

   

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তটি বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে ঋণের কিস্তির ওপর, কারণ রেপো রেট কমানো হলে ব্যাংকগুলি ঋণের সুদের হার কমাতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জন্য সুখবর। ফলে, যারা গৃহঋণ, গাড়ী ঋণ কিংবা অন্যান্য ব্যক্তিগত ঋণ নিয়েছেন, তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও স্বস্তির হতে পারে। এছাড়াও, ব্যবসায়ীদের জন্যও সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে তাদের ব্যবসায়িক ঋণও সস্তা হতে পারে এবং তারা নতুন বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হতে পারেন।

এছাড়া, এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালের পর বেশ কিছু অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে ভারত। করোনা মহামারী, অনিশ্চিত বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং কিছুটা ধীর গতির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে আরবিআইকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। একদিকে, মহামারী পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হলে ঋণ সংক্রান্ত শর্তগুলো শিথিল করতে হবে, অন্যদিকে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান তৈরির দিকে নজর দিতে হবে। এই পদক্ষেপ সেই দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ইঙ্গিত।

এখন, প্রশ্ন উঠছে—এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষের কতটা উপকার হবে? অনেকেই মনে করছেন, সুদের হার কমানোর পর ঋণের কিস্তি কিছুটা কমতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জন্য অনেকটা সহায়ক হতে পারে। তবে, অন্যান্য বিষয় যেমন দ্রব্য মূল্যের বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির প্রভাবও থাকতে পারে।

অর্থনীতির বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধুমাত্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও সহায়ক হতে পারে। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পদক্ষেপের ফলাফল কী হবে, তা দেখার বিষয়।

এটি স্পষ্ট যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং এতে কিছুটা হলেও আমজনতার জন্য স্বস্তি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।