১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik) । কিন্তু পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগেই এক ভীষণ সমস্যায় পড়েছেন রাজ্যের ৫০ জন ছাত্রছাত্রী। এখনও পর্যন্ত তারা তাদের অ্যাডমিট কার্ড পাননি। ফলে পরীক্ষায় বসতে পারবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। সমস্যা এতটাই বড় যে, ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন। অবশেষে, জল গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, এবং এই মামলার শুনানি হবে বৃহস্পতিবার।
এদিন, ডিরোজিও ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান বহু ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, পর্ষদ একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় সাহায্য দিচ্ছে না, অন্যদিকে পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু করার জন্যও তারা প্রস্তুত নয়। এক অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ে যদি পরীক্ষা দিতে না পারে, তারপর কিছু ভুল করে বসে, তাহলে তার পরিণতি তো আমারই হয়ে যাবে। আমি পর্ষদ সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। বাকিরা কথা বলেছেন, তাঁদের বলা হয়েছে আর কিছু করা যাবে না।”
অন্য এক শিক্ষিকা জানান, “পোর্টাল সব নাম দেখাচ্ছে, কিন্তু আমাদেরও তো প্রথম। আমাদের কিছু ভুল হয়েছে, এক পরীক্ষার্থীর বদলে অন্য পরীক্ষার্থী এনরোলমেন্ট পেয়ে গিয়েছে। এমনকি, টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া ছাত্রও এনরোলমেন্ট পেয়েছে। আমাদের আবেদন ছিল, আমাদের আরেকটা সুযোগ দেওয়া হোক। নাহলে, এই বাচ্চাগুলো ২০২৫ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারবে না।”
এদিকে, একজন অভিভাবক জানান, “৯ লাখ ছাত্রের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে, তাহলে ৫০ জন ছাত্রের জন্য ব্যবস্থা করা যাবে না? এই সামান্য উপকারটা করতে তো হবে!”
প্রধান শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি চন্দন মাইতি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দায়। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না করে, মনোনয়নের মাধ্যমে চলছে পর্ষদ। এমন একটি অটোনমাস বডি তৈরি করেছে, যা নিজের কাজে দায়িত্বশীল নয়। শুধুমাত্র অনলাইনে একটা এডিট অপশন দিলেই বিষয়টা ঠিক হয়ে যেত, কিন্তু তারা সেটা করতে চায় না। তারা এখন অহংকারী মনোভাব দেখাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, অনলাইন বিভ্রাটের কারণে ফর্ম ফিলাপের সময় কিছু সমস্যা হয়েছিল। আর তার ফলস্বরূপ, এখনও পর্যন্ত ৫০ জন ছাত্রছাত্রী তাদের অ্যাডমিট কার্ড পাননি। এই সমস্যার কারণে তারা গতকাল ডিরোজিও ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়ে দেয়, এখন আর কিছুই করা সম্ভব নয়। এভাবেই তাদের আন্দোলন শেষ হয়।
এখন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিভাবকরা। তাঁদের দাবি, অন্তত এই ৫০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যাতে তারা এই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারে। বিষয়টি হাইকোর্টের কাছে শুনানির পর, দেখা যাবে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।