চলন্ত নাগরদোলায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা, গোসাবায় তরুণীর মৃত্যু
মেলার আনন্দ মুহূর্তে পরিণত হলো শোকের মেঘে। যেখানে হাসির রোল ও আনন্দের ঝঙ্কার ছিল, সেখানে এক মুহূর্তে নেমে এলো অন্ধকার। আনন্দের বদলে চোখে অশ্রু, মেলার গতি থেমে গেছে শোকের সুনামির মধ্যে। গোসাবার কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের আয়োজিত পাঁচ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা একটি মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণীয় হয়ে রইল। কুমিরমারির বাসিন্দা তিন তরুণী বিদ্যুৎ-চালিত নাগরদোলায় চড়েছিলেন, মুহুর্তের মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। ঘটনায় নিহত হন সায়ন্তনী মণ্ডল নামে এক তরুণী। ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবার মনে এখন শুধুই এক অবর্ণনীয় বিষাদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সায়ন্তনী, মানসী, এবং টুম্পা মণ্ডল তিনজন নাগরদোলায় চড়েন। নাগরদোলাটি গতি বাড়ানো শুরু করলে হঠাৎ করেই ওই তিন তরুণী বাইরে ছিটকে পরে। এর মধ্যে সায়ন্তনী মণ্ডল গুরুতরভাবে আহত হন। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে বেলভিউ নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকদের প্রচেষ্টার পরেও, মঙ্গলবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। প্রত্যক্ষদর্শী কিছু মানুষের মতে, নাগরদোলার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, ওই তিন তরুণী নাগরদোলনায় চড়ার পর মুহূর্তে সেলফি তোলার সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং নাগরদোলার মালিক অমল বৈদ্যকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
এদিন কুমিরমারি GP-এর উদ্যোগে এক ফুটবল টুর্নামেন্টও আয়োজন করা হয়েছিল, যার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় প্রচুর মানুষের উপস্থিতি ছিল, বিশেষ করে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় জমে। এই অনুষ্ঠান ও মেলার মধ্যে নাগরদোলায় চড়ার আনন্দে মেতে উঠতে দীর্ঘ লাইন ছিল। কিন্তু, সেই আনন্দ মুহূর্তে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটায়, সবকিছুই শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
এখন গোসাবা সহ কুমিরমারি অঞ্চলে শোকের আবহ। সায়ন্তনী মণ্ডলের মৃত্যুতে পরিবারের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে। গোসাবা থানার পুলিশ ইতোমধ্যে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং নাগরদোলার মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।