প্রতি বছর ৪ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালিত হয়। যা বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ হিসেবে কাজ করে। এই দিনটি ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের প্রতি সমর্থন জানাতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, প্রচারণা এবং কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৫-এর থিম: ‘United by Unique’ (অনন্য দ্বারা একত্রিত)
বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের প্রতি বছরের একটি নির্দিষ্ট থিম থাকে, যা ক্যান্সার যত্নের বিভিন্ন দিককে গুরুত্ব দেয়। ২০২৫ থেকে ২০২৭ পর্যন্ত বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের থিম হল ‘United by Unique'(অনন্য দ্বারা একত্রিত), যা ব্যক্তিগতকৃত যত্ন এবং চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরে, যাতে প্রতিটি মানুষের আলাদা প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের চিকিৎসা প্রদান করা যায়।
ক্যান্সারের প্রতিরোধ: ঝুঁকি কমানোর জন্য ৫টি জীবনধারার পরিবর্তন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে বর্তমানে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি আমরা ঝুঁকিপূর্ণ উপাদানগুলো এড়িয়ে চলি এবং প্রমাণিত প্রতিরোধ কৌশলগুলো অনুসরণ করি। এখানে কিছু লাইফস্টাইল পরিবর্তন দেওয়া হলো যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে:
তামাক সেবন ত্যাগ করুন
তামাক সেবন ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। যদি আপনি তামাক সেবন করেন, তাহলে সঠিক সহায়তার মাধ্যমে এটি ত্যাগ করার চেষ্টা করুন এবং এর ধোঁয়া থেকেও দূরে থাকুন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন
ফল, শাকসবজি, পূর্ণ শস্য এবং লীন প্রোটিনে সমৃদ্ধ একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, খাসির মাংস এবং মিষ্টি পানীয়ের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যাভ্যাস আপনাকে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং অন্যান্য ঝুঁকির কারণও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান
ক্যান্সারের প্রাথমিক সনাক্তকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত স্ক্রীনিং এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যান্সার সনাক্তকরণে সাহায্য করে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
ভ্যাকসিন নিন
কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, যেমন HPV ভ্যাকসিন যা গর্ভাশয়ের ক্যান্সার এবং অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক, এবং হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন যা যকৃতের ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে পারে।
স্বাস্থ্যকর বিএমআই (BMI) বজায় রাখুন এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন
অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে এবং শারীরিক কার্যকলাপে অংশ নিতে চেষ্টা করুন, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ক্যান্সার মোকাবেলা করার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিকভাবে একযোগে কাজ করতে হবে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।