‘ঝাড়ু’ নাকি ‘কমলা’ কার হাতে যাবে পাল্লা ? কেমন হবে ভোটের ফলাফল? ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির জনতা যে রাজনৈতিক দলটি বেছে নেবেন তার সরাসরি প্রভাব পড়বে দিল্লির ভবিষ্যতের উপর।
বর্তমান নির্বাচনে দিল্লিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে আম আদমি পার্টি, ভারতীয় জনতা পার্টি এবং কংগ্রেস। তবে কংগ্রেসের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাই মূল লড়াইটা হচ্ছে আপ এবং বিজেপির এর মধ্যে। দুই দলই নিজেদের নির্বাচনী ইস্তেহারে একাধিক উপকারিতা ও ভর্তুকির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য কার্যকরী হতে পারে।
এবারের নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যা নির্ধারণ করবে দিল্লির ভবিষ্যৎ। এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক :
মধ্যবিত্ত শ্রেণি:
দিল্লির প্রায় ৬৭ শতাংশ পরিবারের মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ রয়েছে। যারা ভোটারদের একটি বিশাল অংশ গঠন করে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাজেটের পর বিজেপি কিছু সুবিধা এবং সেলারি প্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ প্রস্তাব দিয়েছে। এই বাজেটের প্রভাব দিয়ে বিজেপি এখন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোটারদের আরও আকর্ষণ করতে চাইছে। অন্যদিকে আপ এর বিরুদ্ধে দুটি পূর্ণ মেয়াদ এবং নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তাদের সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে।
মুসলিম ও দলিত ভোট:
দিল্লির মুসলিম ভোটারদের সংখ্যা ১৩ শতাংশ, যারা সাধারণত আপ এর প্রতি সমর্থন দিয়ে থাকে। আপ ২০২০ সালের নির্বাচনে মুসলিম এলাকাগুলিতে ব্যাপক জয় পায়। তবে বিজেপি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আরও নজর দিয়েছে। বিশেষ করে তাদের উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে। দলিত ভোটও অনেকাংশে আপ এর পক্ষে ছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদির সম্প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি “ঝুগি বসতি ভাঙা হবে না” এটা ভোটারদের মনোভাব বদলাতে পারে।
ফ্রি সেবা এবং ভর্তুকি:
আপ এবং বিজেপি উভয় দলই ভোটারদের আকৃষ্ট করতে একাধিক ফ্রি সেবা ও ভর্তুকির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আপ ফ্রি বিদ্যুৎ, জল এবং নারীদের জন্য নগদ সহায়তার কথা বলছে, তবে বিজেপি এবার নিজেদের বাজেটের মাধ্যমে মধ্যবিত্তদের জন্য ট্যাক্স অব্যাহতি এবং অন্যান্য সুবিধার কথা বলেছে।
মহিলাদের ভোট:
দিল্লিতে ৭১.৭ লাখ মহিলা ভোটার রয়েছেন। এবং এই ভোটাররা যে কোনও নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মহিলাদের জন্য আপ ১,০০০ টাকার নগদ সহায়তা বাড়িয়ে ২,১০০ টাকা করতে চায়। তবে বিজেপি ২,৫০০ টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই বিষয়টি নির্বাচনের ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থী:
আপ এই নির্বাচনেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে বিজেপি এখনও তাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবুও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিজেপি এর প্রধান মুখ হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছেন এবং দিল্লির উন্নয়নের কথা বলছেন।
ফলাফল পূর্বাভাসে, ফ্যালোদি সত্তা বাজার অনুযায়ী আপ ৩৮-৪০টি আসন পেতে পারে, আর বিজেপি ৩০-৩২টি আসনে জয়ী হতে পারে। তবে কংগ্রেসের জন্য কোনও পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি।
এই পাঁচটি কারণ দিল্লির পরবর্তী সরকার নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।