নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে কেজরীওয়াল-মোদি সংঘর্ষ

আসন্ন দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ভোট হতে বাকি আর মাত্র ৪৮ ঘন্টা। তার আগে সোমবার নির্বাচনী প্রচারের শেষ মুহূর্তে, দিল্লির রাজনীতি তীব্র উত্তেজনায় মেতে উঠেছে। আপ…

আসন্ন দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ভোট হতে বাকি আর মাত্র ৪৮ ঘন্টা। তার আগে সোমবার নির্বাচনী প্রচারের শেষ মুহূর্তে, দিল্লির রাজনীতি তীব্র উত্তেজনায় মেতে উঠেছে। আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির শীর্ষ নেতারা একে অপরকে দুর্নীতি এবং দিল্লির জনগণের প্রতি ব্যর্থতার অভিযোগে তীব্র আক্রমণ করেছেন।

সোমবার সকালে কেজরীওয়াল অভিযোগ করেছেন যে, গত দশ বছরে বিজেপি দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই করেনি, বরং ধনী বন্ধুদেরই সুবিধা দিয়েছে। তিনি কংগ্রেসের মত বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন।

   

কেজরীওয়াল বিজেপির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার গঠনের তত্ত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “যদি কেন্দ্র এবং রাজ্যে একই দল থাকে, তাহলে তার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে জনগণের কষ্ট বেড়ে যাওয়া।”

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সম্প্রতি ঘোষিত ‘১২ লক্ষ টাকার মধ্যে আয় না থাকা ব্যক্তিদের ইনকাম ট্যাক্স মাফ’ পরিকল্পনাকে কেজরীওয়াল “জনগণের প্রতি প্রপাগান্ডা” হিসেবে আক্রমণ করেছেন আপ প্রধান। তিনি দাবি করেছেন বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে কম আসন পেয়ে এই ধরনের ‘ছাড়’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়াও অরবিন্দ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বিশেষ করে তাঁর গত সপ্তাহের মন্তব্যের পর, যেখানে তিনি বলেছিলেন বিজেপির হরিয়ানার সরকার “যমুনার জলে বিষ ঢালছে”। কেজরীওয়াল এর দাবি নির্বাচন কমিশন বিজেপির কাছে ‘সমর্পিত’ এবং কমিশনের প্রধান রাজীব কুমারকে হুমকি দেন, “আপনার অবসর-পরবর্তী কাজ কি? গর্ভনর, প্রেসিডেন্ট?”

পাল্টা বিজেপির পক্ষ থেকেও তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির ছাত্রদের সঙ্গে এক সভায় কেজরীওয়ালের সরকারের শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন “দিল্লিতে, আপ ক্লাস ৯ পরবর্তী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালানোর অনুমতি দেয় না। যাদের পাশ করার গ্যারান্টি থাকে, শুধু তাদেরই পড়াশোনা করার সুযোগ দেয়া হয়।”

শিক্ষা এখন নির্বাচনী প্রচারে একটি মূল ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি কংগ্রেস এবং আপ তিনটি দলই ছাত্রদের জন্য নানা সুবিধার প্রস্তাব দিয়েছে, যেমন মেট্রোতে ছাড়, সরকারি বাসে বিনামূল্যে যাতায়াত, এবং আর্থিক সহায়তা।

বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহও প্রচারে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি আবারও মনি সিসোদিয়া ও কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে মদ ব্যবস্থাপনা কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছেন। শাহ দাবি করেছেন, সিসোদিয়া তার শিক্ষা মন্ত্রীর পদে থাকাকালে মন্দির, স্কুল এবং গুরুদুয়ারার কাছে মদের দোকান খুলেছেন এবং এর ফলে তাঁকে কারাগারে যেতে হয়েছে।

আগামী বুধবার দিল্লির একক দফায় ভোট হবে, এবং তিন দিন পর ফলাফল ঘোষণা হবে। আপএখন রাজনৈতিক অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে, তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার জন্য তীব্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আবার অন্যদিকে বিজেপি শক্তি প্রয়োগ করে কেজরীওয়াল তথা আপকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়।
এখন দেখার বিষয় এই নির্বাচনী যুদ্ধে কে জয়ী হবে এবং দিল্লির রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেবে।