২০২৫-এ আই-লিগ ২০২৪-২৫-এ (I-League 2024-25) ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবকে ৪-০ ব্যবধানে পরাজিত করে রাজস্থান এফসি তাদের অপরাজিত রেকর্ডকে অব্যাহত রেখেছে। গোয়া রাজ্যের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে রাজস্থান এফসি আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে।
এই ম্যাচে স্প্যানিশ স্ট্রাইকার গেরার্ড আরটিগাস প্রথমার্ধে গোল করে রাজস্থান এফসির হয়ে স্কোরিং শুরু করেন। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে উরুগুয়ানের সাবস্টিটিউট লুকাস রড্রিগেজ ক্যাব্রাল, ভারতীয় খেলোয়াড় নাওবা মীটেই এবং স্প্যানিশ অধিনায়ক অ্যালেন ওয়ারজুন গোল করেন, যার ফলে রাজস্থান এফসি ৪-০ ব্যবধানে বিশাল জয় লাভ করে। এই জয়ের ফলে তারা আই-লিগের টেবিলের চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে এবং এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে। তারা তৃতীয় স্থানে থাকা গোকুলাম কেরালা এফসির সমান পয়েন্ট নিয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলেছে।
রাজস্থান এফসির দুঃসাহসিক প্রতিরোধের পরিবর্তনটি ছিল সত্যিই নাটকীয়। ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪-এ শিলং লাজং এফসির কাছে ৮-০ ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার পর থেকে তারা আই-লিগে ৮টি ম্যাচে অপরাজিত হয়ে ১৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। তাদের এই অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন দলের কোচ এবং খেলোয়াড়দের জন্য সার্থক অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, ডেম্পো এসসি আবারও কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছে। আগের ম্যাচে জয় লাভের পর দলটির মধ্যে স্বপ্নের উদ্দীপনা ছিল, তবে তারা ম্যাচে নিজেদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ডেম্পো এসসি পুরোপুরি সঠিক পরিকল্পনা এবং তীব্রতা ছাড়াই খেলেছে, এবং রাজস্থান এফসির শক্তিশালী রক্ষণকে অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের এই হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে তারা ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে অবস্থান করছে।
ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে প্রথমার্ধের শেষদিকে, যখন অ্যালেন ওয়ারজুন ডান দিক থেকে একটি সঠিক ক্রস দেন। রোনাল্ডো জনসন বলটি ছেড়ে দেন, যা ডেম্পোর রক্ষকদের বিভ্রান্ত করে দেয় এবং তা গেরার্ড আরটিগাসকে সহজেই গোল করার সুযোগ দেয়। ডেম্পো গোলকিপার আশীষ সিবি বলটি থামানোর চেষ্টা করেন, তবে তিনি সফল হতে পারেননি এবং বলটি নেটের পেছনে চলে যায়।
রাজস্থান এফসি আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে, যখন একটি গোলমুখী আক্রমণ চমৎকারভাবে সমাপ্ত হয়। ডেম্পোর রক্ষকেরা বেশ কিছু সময় বলটি ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেননি, এবং এর সুযোগ গ্রহণ করে লুকাস রড্রিগেজ ক্যাব্রাল সহজেই বলটি জালে পাঠান।
এতে মাত্র ৫৮ মিনিটে রাজস্থান তাদের লিড দ্বিগুণ করে। এক দীর্ঘপাল্লার পাস ডেম্পো রক্ষকদের অতিক্রম করে চলে যায়, এবং মোহাম্মদ আলি বলটির বাউন্স ঠিকমত বিচার করতে ব্যর্থ হন। ফলে নাওবা মীটেই একটানা গোল করে রাজস্থানকে ৩-০ তে এগিয়ে দেয়।
এবং ম্যাচের শেষ মিনিটে, ৮৬তম মিনিটে অ্যালেন ওয়ারজুন একটি অসাধারণ শট দিয়ে দলের জয়ের নিশ্চিত করেন। লুকাস রড্রিগেজ ক্যাব্রাল তাকে একটি দারুণ পাস দেন এবং ওয়ারজুন তা তার বাঁ-পায়ে জোরালো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে গোল করেন, যা ৪-০ ব্যবধানে রাজস্থান এফসির বিশাল জয় নিশ্চিত করে।
ডেম্পোর জন্য এটি একটি হতাশাজনক পরিণতি ছিল, কারণ তারা এই ম্যাচে যথেষ্ট কৌশল এবং সমন্বয়ের অভাব অনুভব করেছে। তাদের আক্রমণাত্মক পরিকল্পনায় কমতি ছিল, এবং তারা রাজস্থান এফসির দৃঢ় রক্ষণভাগের বিরুদ্ধে কার্যকরী কিছু করতে পারেনি।
এদিকে, রাজস্থান এফসি তাদের ধারাবাহিক সফলতায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং তাদের উন্নতির ধারাকে ধরে রাখার জন্য তাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। তারা আই-লিগে একটি শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত।
এখন রাজস্থান তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে তাদের পরবর্তী ম্যাচে এবং ডেম্পো নিজেদের উন্নতি করতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।