শনিবার আম আদমি পার্টি প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। পোস্টে তিনি বিজেপি সমর্থকদের সরাসরি প্রশ্ন করেছেন, “যদি আমি হারি, আপনার কি হবে?” তিন মিনিটের এক ভিডিওর বার্তায় কেজরীওয়াল বিজেপি সমর্থকদের কাছে তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে, তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে চেয়েছেন।
ভিডিওতে কেজরীওয়াল তার এক বিজেপি সমর্থকের সাথে হওয়া একটি কথোপকথন স্মরণ করেছেন। যেখানে সমর্থক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “অরবিন্দজী, আপনি যদি হারেন, তবে আপনার কী হবে?” তার উত্তরে কেজরীওয়াল বলেছেন, “আমার কথা বাদ দিন, আপনি বলুন তো, আমি যদি হারি তবে আপনার কী হবে?” এরপর কেজরীওয়াল দিল্লির মানুষের জন্য তার সরকারের করা বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন যা দিল্লির জনগণের জন্য উপকারী হয়েছে।
দিল্লির সরকারি সেবা নিয়ে উদ্বেগ –
ভিডিওতে কেজরীওয়াল দিল্লির একটি বিজেপি সমর্থককে তার সন্তানের শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করেন। সমর্থক জানিয়েছিলেন যে, তার সন্তান দিল্লির একটি সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর কেজরীওয়াল বলেন, “বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সরকারি বিদ্যালয়ের অবস্থা কেমন, তা তো জানেন। যদি আমি হারি, তাহলে দিল্লির সরকারি বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনার বিদ্যুৎ বিল কি হয়, আমি জানি। দিল্লিতে আপনি বিনামূল্যে শিক্ষা, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা পান। যদি আমি হারি, তবে এসব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে।” কেজরীওয়াল তার সরকারের অনেক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে, যা দিল্লির বাসিন্দাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী, এবং এই সব সেবা হারানোর শঙ্কা তৈরি হবে যদি আপ ক্ষমতা থেকে হারিয়ে যায়।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ –
শুক্রবার কেজরীওয়াল ভারতের নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি যমুনার জল সংকট নিয়ে কমিশনের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেজরীওয়াল দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশন তাকে লক্ষ্য করে কাজ করছে, অথচ হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিং সানির ভূমিকা উপেক্ষা করছে।
কেজরীওয়াল আরও বলেছেন, “যদি আমরা প্রতিবাদ না করতাম এবং আওয়াজ না তুলতাম, তবে দিল্লির এক কোটি মানুষকে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত। ইসিআই আমাকে নোটিশ পাঠিয়েছে কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি দিল্লিকে জল সংকট থেকে বাঁচিয়েছি, আর আমাকে শাস্তি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, প্রতিবেশী রাজ্যগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে জল সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে।
নির্বাচনী দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনা –
কেজরীওয়াল নির্বাচন কমিশনকে সমালোচনা করে বলেন, “দিল্লিতে টাকা, শাড়ি, জুতো ও জ্যাকেট খোলামেলা বিতরণ হচ্ছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ইসিআই আজ বিজেপির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে সাহস দেখাচ্ছে না।”
তিনি নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং জল সংকটের বিষয়টি পুনরায় তুলেছেন।
শাস্তি মেনে নেওয়ার প্রস্তুতি –
এই সব অভিযোগ সত্ত্বেও কেজরীওয়াল বলেছেন যে কোনো শাস্তি তিনি মেনে নেবেন। “আমাকে যে কোনো শাস্তি দেওয়া হোক, আমি তা মেনে নেব। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে কোনো সময় চাই না। যদি তারা আমাদের সাথে দেখা করতে চায়, তবে আমরা তাদের কাছে যাব। নতুবা আমরা গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে উত্তর দেব এবং তিনটি কমিশনারকে জলের বোতল দেব”।
কেজরীওয়াল তার ভিডিও বার্তায় দিল্লির বাসিন্দাদের আরও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে তার সরকার হারলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা তারা এখন উপভোগ করছেন।