মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি এই মামলা দায়ের করে দাবি করেছেন, উত্তর প্রদেশের মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় যারা অবহেলা বা গাফিলতি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, সঠিকভাবে পরিষেবা প্রদান এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় ঘটতে না পারে।
মৌনি অমাবস্যায় মহাকুম্ভে স্নান করতে এসে বিপুল ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় অন্তত ৩০ জনের, এবং আহত হন প্রায় ৬০ জন। এই ঘটনা গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, এবং আদালতে মামলাটি উঠলে এটি জনস্বার্থের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়ে উঠতে পারে। তিওয়ারি দাবি করেছেন, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে এবং গাফিলতি বা অবহেলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
মামলার আর্জিতে আরও বলা হয়েছে, মহাকুম্ভমেলার মতো বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতে এমন বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হয় যে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সঠিক নির্দেশিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাতে সকল রাজ্যকে সঠিকভাবে পরিষেবা ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাজ্যবাসীদের জন্য বিশেষ সেন্টার তৈরি করা উচিত। এসব সেন্টার থেকে পুণ্যার্থীদের সব রকমের সাহায্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহজেই দেওয়া যাবে। সেইসঙ্গে, দুর্ঘটনা বা বিপদজনক পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত সাহায্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া, কুম্ভমেলার মতো অনুষ্ঠানগুলিতে বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে আঞ্চলিক ভাষায় রাস্তার বোর্ড এবং নির্দেশিকা ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সেগুলি সহজে বুঝতে পারে। মামলায় আরও বলা হয়েছে, রাজ্যগুলির উচিত ইলেকট্রনিক মাধ্যমে পুণ্যার্থীদের কাছে জরুরি বার্তা পাঠানোর ব্যবস্থা করা। এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তারা সহজেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে, যা তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় সাহায্য করবে।
মামলার মধ্যে এটাও বলা হয়েছে যে, ভবিষ্যতে কুম্ভমেলার মতো বৃহৎ জমায়েতে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা কমানোর জন্য, এন্ট্রি এবং এক্সিট পয়েন্টগুলোতে যথাযথ জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষের চলাচল সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে এক্সিট-এন্ট্রি পয়েন্টে যথেষ্ট জায়গার ব্যবস্থা করা এবং পর্যাপ্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা আবশ্যক।
এই জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে সরকারের অবহেলা এবং মাদকাসক্তির বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। কুম্ভমেলার মতো অনুষ্ঠানে মানুষের নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিশ্চিত করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।