নীলবাতি গাড়ি নিয়ে পিকনিকে হাজির এক গাড়ির চালক ও তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বোদাগঞ্জের গৌরীকোণ এলাকায়। ঘটনাটি মূলত এক সরকারি গাড়ি নিয়ে। যে গাড়িটি কৃষি আধিকারিকরা ব্যবহার করেন, সেই গাড়িতেই এবার ঘটল বিতর্ক।
সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন পিকনিক করতে গিয়েছিলেন কিছু লোক। গাড়িটি দেখে স্থানীয়রা প্রথমে ভেবেছিলেন, সম্ভবত উত্তরবঙ্গের (Jalpaiguri) অতিরিক্ত কৃষি আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডল সপরিবারে সেখানে এসেছেন। পরে তারা লক্ষ্য করেন, গাড়িতে যিনি ছিলেন, তিনি কৃষি আধিকারিক নন। ওই গাড়ির চালক বাপ্পা সরকার নিজের পরিবারের সঙ্গে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন। গাড়ি ছিল সরকারি, তাতে নীলবাতি এবং সরকারি বোর্ড লাগানো ছিল। চালক নিজের খেয়াল-খুশি মতো গাড়ি চালিয়ে পিকনিক স্থলে পৌঁছান। তখন তিনি নিজের পরিচয় দিচ্ছিলেন যেন তিনি সরকারি অফিসের কেউ। খোঁজ নিতেই সামনে আসে ওই গাড়িতে করে পিকনিকে এসেছেন কৃষি আধিকারিকের চালক বাপ্পা সরকার ও তার পরিবার।
এই ঘটনার পর স্থানীয়রা বিষয়টি কৃষি আধিকারিকের কানে তুলে দেন। পরদিন, শুভেন্দু মণ্ডল বিষয়টি জানার পর, বাপ্পা সরকারকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি গতকাল কোথায় ছিলেন। বাপ্পা সরকার পিকনিকে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি যে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছেন, সে কথা অস্বীকার করেন। তখন সেটা প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন কৃষি আধিকারিক। এরপর, বাপ্পা সরকার একবারে স্বীকার করেন যে, গাড়িটি তার নিজের নয়। কৃষি দফতরের গাড়ি হিসেবে ভাড়া রয়েছে।
এটি সত্যিই একটি অবাক করা ঘটনা। সরকারি গাড়ির নাম ভাঙিয়ে বাপ্পা সরকার নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেন ‘গাড়ি থেকে সরকারি বোর্ড ও নীলবাতি খুলে নেওয়া হয়নি।’ এরকম সময় কোনও খারাপ কিছু ঘটলে, সরকারের নাম জড়িয়ে যেত। রাজ্য সরকার হয়তো বদনামে পড়ত। কৃষি দফতরের একজন আধিকারিক বলেছিলেন, এ ধরনের কাজ ভুলের সামিল এবং এর জন্য অবশ্যই শাস্তি হতে পারে।
এই বিষয়ে অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর অফ এগ্রিকালচার নর্থ বেঙ্গল রিজিয়নের দফতরের হেড ক্লার্ক জয়দেব রায়ের বক্তব্য, ‘বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে। ওই গাড়ির চালককে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন কাজ না করে তার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। কৃষি আধিকারিককে সবটা জানানো হয়েছে। নিজের ভুল স্বীকার করেছে চালক।’
সরকারি গাড়ি ব্যবহার করার জন্য প্রশাসনিক নিয়মাবলি রয়েছে। এ ধরনের গাড়ি শুধু সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তাদের এই সুবিধা কেবল সরকারি কাজে ব্যবহৃত হবে, ব্যক্তিগত কাজে নয়। এ ধরনের ঘটনা সকলকে মনে করিয়ে দেয় যে, সরকারি সম্পত্তির যথাযথ ব্যবহার কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কারণে যদি সরকারি গাড়ি বা সম্পত্তি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয়, তবে তা গুরুতর অপরাধ হিসেবে ধরা হতে পারে। এর ফলে সরকার বা প্রশাসনের প্রতি মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হতে পারে।
এই ঘটনার পর শোরগোল শুরু জলপাইগুড়িতে(Jalpaiguri)। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।