মুম্বই লবির কাঁটায় জর্জরিত হার্দিক! সৌজন্যে কারা?

টি-২০ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন সহ অধিনায়ক। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণকারী ২০ তম ওভারটা করেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়াই (Hardik Pandya)। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাঁকে নিয়ে তুমুল ঝড় ঝাপটার মুখে…

hardik pandya created recrod in t20 world cup 2024

টি-২০ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন সহ অধিনায়ক। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণকারী ২০ তম ওভারটা করেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়াই (Hardik Pandya)। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাঁকে নিয়ে তুমুল ঝড় ঝাপটার মুখে পড়লেও, নিজদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকেই জানিয়ে দেয় হার্দিকই তাদের অধিনায়ক। জাতীয় দলে কিন্তু ঘটে চলেছে উল্টোটাই। একসময় যাকে সাদা বলার ক্রিকেটের অধিনায়ক ভাবা হচ্ছিল সেই তিনি এখন নেতৃত্ব থেকে শত যোজন দূরে। কোনও বিবেচনাতেই রাখা হচ্ছে না এখন।

ভাইস ক্যাপ্টেন হিসাবেও না। উড়ে এসে সেই জায়গা পাচ্ছেন অক্ষর প্যাটেল। তিনি যে নাম কে ওয়াস্তে সহ অধিনায়ক তা ম্যাচ দেখলেই বোঝা যায়। নিজের খেলা ছাড়া ডেপুটি হিসেবে কোনও দায়িত্বই তাকে নিতে দেখা যায় না। হার্দিকে সমস্যাটা কোথায়? উত্তর নেই। প্রশ্ন উঠছে রোহিতের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্যাপ্টেন্সি ছিনিয়ে নেওয়ার এফেক্ট কী পড়ছে জাতীয় দলে ভারতের চিরকাল অতি সক্রিয় মুম্বই লবির মাধ্যমে? সৌজন্যে কী ‘অজিত এন্ড রোহিত কো.’?

   

এই হার্দিক পান্ডিয়াই একটা সময় ছিলেন বোর্ডের নয়নের মনি, এখন যেন গলার কাটা। তাঁকে দলের সীমিত ওভারের ম্যাচে একজন দীর্ঘস্থায়ী অধিনায়ক হিসাবেই দেখতে চেয়েছিল বিসিসিআই। এখন তারাই ভাইস ক্যাপ্টেন করতেও রাজি হচ্ছে না।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজে সূর্য অধিনায়ক হলে হার্দিক সহ অধিনায়ক হবেন, এটা সবাই ধরেই নিয়েছিল। বাস্তবে দেখা গেল অক্ষর প্যাটেল সহ অধিনায়ক। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হার্দিককে ভাইস ক্যাপ্টেন করতে চেয়েছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর কিন্তু বাধ সাধেন দু’জন, অগরকার এবং রোহিত। তাদের সুপারিশেই সহ অধিনায়ক করা হয় শুভমান গিলকে।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে ইডেনে নেট প্র্যাকটিস চলাকালীন দেখা যায় হার্দিক আর কোচ গৌতম গম্ভীরকে এক কোণে দাঁড়িয়ে নিবিষ্ট মনে আলোচনা করতে। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে দুজনের এই আলোচনা চলে।

ভারতীয় দলে এসেই কার্যত হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন হার্দিক। আইপিএল ছাড়াও জাতীয় দলের জার্সিতে একসময় প্রায় অপরিহার্য হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এই অবস্থায় “কফি ইউথ করণ” টিভি শোতে এমন কিছু বেফাঁস কথা বলে ফেলেন যা নিয়ে ছি ছি পরে যায়। বাধ্য হয়ে বোর্ড তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করে। পত্রপাঠ হার্দিক এবং অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গি কেএল রাহুলকে অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে দেশে ফেরানো হয়। সাসপেন্ড করা হয় দু’জনকেই। বিজয় শংকর এবং শুভমন গিলকে ঢোকানো হয় দলে।

লম্বা সময় বাইরে কাটিয়ে, আবার দলে ফিরে আসেন হার্দিক। আবার নিজের জায়গা মজবুত করেন তিনি। বেশ কিছু টি২০ ম্যাচে জাতীয় দলের নেতৃত্বও দেন তিনি। গুজরাত টাইটানস তার নেতৃত্বেই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়।

কিন্তু গোলমাল হয়ে যায় এরপরই। গুজরাত ছেড়ে মুম্বইয়ে যোগ দেন তিনি। জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন রোহিত ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সেরও ক্যাপ্টেন। রোহিতের বদলে অধিনায়ক করা হয় হার্দিককে। আইপিএল-এর অন্যতম সেরা টিমের অন্দরে তৈরি হয় অস্বস্তির পরিবেশ। টিম কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে টুর্নামেন্টে। গোটা দেশ জুরে সহানুভূতির হাওয়া বইতে থাকে রোহিত শর্মার অনুকূলে। আর হার্দিকের কপালে জোটে শুধু টিটকিরি।

সেই হার্দিক আবার নিজের পারফরমেন্সের জোরে ভারতীয় দলে জায়গা শক্ত করার পাশাপাশি দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের মন জয় করে নেন। তারপরে আজ কেন তাকে এভাবে ব্রাত্য করা হচ্ছে। অবশ্যই জাতীয় দলে খেলাটাই একজন ক্রীড়াবীদের কাছে সর্বপ্রথম ব্যাপার কিন্তু লিডিং কোয়ালিটি থাকা ক্রিকেটারকে কী ডেপুটি হিসাবে রেখে বুদ্ধি প্রয়োগের কাজেও লাগানো যায় না? অবশ্যই সিনিয়র হিসাবে তা তিনি করতেই পারেন। তবে পদ দিলে অনেক ক্ষেত্রে অনেক কিছু ভালো হয় দলের। কেন এমন? ৩০০ শব্দ পেরিয়েও উত্তর নেই। খোঁচা দিচ্ছে হার্দিককে খোঁচা দিচ্ছে মুম্বই লবি?