অনিশ্চিয়তা ম্যাচে, কলকাতা লিগের ভবিষ্যৎ কী? চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল!

কলকাতা ফুটবল লিগ (CFL), যা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী ফুটবল প্রতিযোগিতা। বর্তমানে এক নতুন জটিলতায় পড়েছে। গত সোমবার তথা ২১ জানুয়ারি, আইএফএ (IFA) কলকাতা…

East Bengal vs Diamond Harbour CFL Clash Likely on October 14, Set to Be League Decider

কলকাতা ফুটবল লিগ (CFL), যা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী ফুটবল প্রতিযোগিতা। বর্তমানে এক নতুন জটিলতায় পড়েছে। গত সোমবার তথা ২১ জানুয়ারি, আইএফএ (IFA) কলকাতা লিগের বাকি দুটি ম্যাচের জন্য যে দিন ঘোষণা করেছিল, তা এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ১৩ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচগুলির জন্য নৈহাটি স্টেডিয়ামের বুকিং নিশ্চিত করলেও। মাত্র একদিনের ব্যবধানে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, নির্ধারিত দিনগুলোতে তারা স্টেডিয়াম ব্যবহার করতে দিতে পারবে না। এর ফলে কলকাতা লিগের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন নতুন ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) কী সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন? সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বাংলার ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে।

আইএফএ গত সোমবার ঘোষণা করেছিল, ১৩ ফেব্রুয়ারি ইস্টবেঙ্গল ও ডায়মন্ডহারবার এফসির মধ্যে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, ১৮ ফেব্রুয়ারি ডায়মন্ডহারবার এফসি ও মহামেডানের মধ্যে ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই ঘোষণা প্রকাশ হওয়ার পরই ডায়মন্ডহারবার এফসি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং জানায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের আই লিগ দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচ রয়েছে। ফলে, তারা ১৮ তারিখে কলকাতা লিগের ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত নয়। এই কারণেই ভ্যেনু পরিবর্তন ও তারিখ বদলের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।

   

অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলও নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানিয়েছিল যে, তাদের পক্ষে উক্ত তারিখে ম্যাচ খেলা সম্ভব নয় এবং তারা ভ্যেনু পরিবর্তনের জন্য আইএফএকে একটি চিঠি প্রদান করে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার নৈহাটি স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ অবশেষে জানিয়ে দেয় যে, আইএফএর নির্ধারিত তারিখে স্টেডিয়ামে অন্য কোনো অনুষ্ঠান রয়েছে এবং তারা স্টেডিয়াম ভাড়া দিতে পারবে না।

আইএফএর সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ দত্ত এক বিবৃতিতে জানান, “স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, উক্ত তারিখে স্টেডিয়াম ব্যবহারের জন্য তারা অনুমতি দিতে পারবে না। এখন আমাদের নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে এবং আগামীতে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।”

এই ঘটনা কলকাতা ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ধরেছে। কলকাতা লিগের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতার ভবিষ্যৎ প্রায় প্রতিটি মরসুমেই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। স্টেডিয়াম ব্যবস্থাপনা, ভ্যেনু সমস্যা এবং ক্লাবগুলির শিডিউল এর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণত, কলকাতা লিগের ম্যাচগুলি শহরের বড় স্টেডিয়ামগুলিতে আয়োজন করা হয়, কিন্তু বিভিন্ন কারণে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকে। যার ফলে লিগের নিয়মিত আয়োজন ব্যাহত হয়।

এছাড়া, কলকাতা লিগের ক্লাবগুলির জন্যও এই ধরনের সমস্যা ব্যাপক হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান, ডায়মন্ডহারবার এর মতো বড় ক্লাবগুলো তাদের আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ম্যাচের শিডিউল মেনে চলতে গিয়ে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছোট ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে এই ধরনের সমস্যা কম থাকে, তবে বড় ক্লাবগুলোকে তাদের পারফরম্যান্স এবং শিডিউল নিয়ে আরও বেশি চিন্তা করতে হয়।

কলকাতা লিগের তৃতীয় স্তরের দলে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোও প্রভাবিত হয় এই ধরনের সমস্যা থেকে। তাদের জন্য লিগের ম্যাচ খেলতে যাওয়ার সময়, অর্থনৈতিক এবং শারীরিক দিক থেকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। যে সকল ক্লাব আরও কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছে, তাদের জন্য এই ধরনের অনিশ্চয়তা বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

এখন প্রশ্ন হল, আইএফএ কি এই সমস্যা সমাধান করতে পারবে? নৈহাটি স্টেডিয়ামের মতো ছোট স্টেডিয়ামের পরিবর্তে অন্য কোনো বিকল্প স্টেডিয়াম খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, সেটাও এখন একটি বড় প্রশ্ন। আরেকটি বিষয় হল, কলকাতা লিগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেমন হবে, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। এর আগে, কলকাতা লিগের সূচি প্রায়ই হুট করে পরিবর্তিত হয়, যা দলের প্রস্তুতিতে প্রভাব ফেলে।

ফুটবল প্রেমীদের জন্য এটি একটি হতাশাজনক খবর হলেও, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের এখন অতি দ্রুত কোনো বিকল্প সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে এই ধরনের সমস্যা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে। কলকাতা লিগের আসল উদ্দেশ্যই হলো তরুণ ফুটবল প্রতিভাদের উপযুক্ত মঞ্চ দেওয়া এবং সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য আরও উন্নত ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।