এবার সরস্বতী পুজোর পরই তৃণমূল কংগ্রেসে বড় রদবদল হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, ফেব্রুয়ারি মাসে সরস্বতী পুজো মিটলেই দলের সংগঠনে পরিবর্তন ঘটানো হবে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, “সংগঠন আমিই দেখব”, অর্থাৎ দলের রাশ আর কেউ হাতে নেবেন না। দলের অভ্যন্তরীণ নেতাদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মমতা।
এদিন, মুর্শিদাবাদ এবং মালদহে দলের বিধায়ক ও নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে মমতা আরও একবার স্পষ্ট করে দেন যে, জেলাস্তর এবং ব্লক স্তরের সমস্ত রদবদল তিনি নিজেই করবেন। মালদায় মঞ্চের পিছনে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি বলেছিলেন, “আমিই সংগঠন দেখব,” যা দলের নেতৃত্বের মধ্যে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
এছাড়া, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও রদবদলের বিষয়ে আগেই মন্তব্য করেছিলেন। সম্প্রতি ডায়মন্ড হারবারে সেবাশ্রয় প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, “রদবদল হবেই,” যা দলের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, অভিষেকের এই মন্তব্যের পর দলের নেতাকর্মীরা নতুন করে জল্পনা শুরু করেছেন যে, আগামীদিনে কীভাবে এবং কোন পথে রদবদল হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিষেকের বক্তব্যে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রদবদল পারফরমেন্সের ভিত্তিতে হবে। তবে, এবার তা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। দলের নেতাদের মধ্যে এই পরিবর্তনের ব্যাপারে নানা মতামত রয়েছে, তবে একসাথে সবাই মমতার নির্দেশকে মেনে নিতে রাজি। দলীয় সূত্রে খবর, মমতা মনে করেন, এই পরিবর্তন দলের স্বার্থে এবং ভবিষ্যতের জন্য জরুরি, যাতে তৃণমূল আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং রাজ্যের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।
মমতার এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন দলের ভিতরে নতুন প্রেরণা সৃষ্টি করবে, তেমনি দলের নেতৃত্বে নতুন অঙ্গীকার এবং চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করবে। যেহেতু মমতা নিজের হাতে সংগঠন দেখার কথা বলেছেন, তাই তার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে নতুন শক্তির উদ্ভব হতে পারে। তবে, এর পেছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, বিশেষ করে তিনি নিজে যখন ‘রদবদল’ বিষয়ক আলোচনা শুরু করেছিলেন, তখন থেকেই দলের মধ্যে এই পরিবর্তন নিয়ে চর্চা শুরু হয়।
এবার, দলের কর্মী থেকে শুরু করে নেতা-নেত্রীদের মধ্যেও এক নতুন দিশার প্রয়োজনীয়তা দেখা যাচ্ছে। তৃণমূলের বড় রদবদলকে কেন্দ্র করে দলের ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নেতৃত্বের কৌশল এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয়তা, তৃণমূল কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে বলেই আশা করা হচ্ছে।