আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের খুন ও ধর্ষণ মামলায় সঞ্জয় রাইয়ের দোষী সাব্যস্ত হওয়া, তিলোত্তমার পরিবারে অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। সোমবার, ২০ জানুয়ারি, তিলোত্তমার বাবা-মা সকাল থেকেই শিয়ালদহ কোর্টে পৌঁছেছেন, যেখানে দুপুর সাড়ে ১২ টায় সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা হবে।
তবে, তিলোত্তমার বাবা-মায়ের মধ্যে এক ধরনের আক্ষেপ রয়েছে। তারা দাবি করছেন, শুধুমাত্র সঞ্জয় রাইকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও, এই অপরাধের সাথে আরও অনেকেই যুক্ত রয়েছে।
তিলোত্তমার বাবা, গভীর দুঃখ ও ক্ষোভের সাথে বলেন, “পাঁচ দিনে পুলিশ যা তদন্ত করেছিল, পাঁচ মাসেও সিবিআই ও সেই একই তদন্ত করেছে।” তাদের অভিযোগ, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে, তা ছিল অপ্রতুল, এবং সত্যিকার অপরাধীরা এখনো মুক্ত। তিলোত্তমার মা আরও বলেন, “আমরা চাই, সঞ্জয় একা নয়, অন্য সকল অপরাধীও শাস্তি পাক।” তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, শাস্তি হিসেবে সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।
তিলোত্তমার বাবা বলেন, “যতদূর লড়তে হয়, লড়ব। সঞ্জয়ের একা দোষী নয়, অন্যান্য দোষীদেরও শাস্তি দিতে হবে।” তার মতে, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সচিব সন্দীপ ঘোষকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন, যিনি এই মামলায় অভিযুক্ত। তিলোত্তমার বাবা আরও দাবি করেছেন, “রাজ্য সরকারের কিছু কর্মকর্তাদের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের যোগাযোগ রয়েছে, তাই তাকে এখনও তার পদ থেকে সরানো হয়নি।” তিলোত্তমার মা জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পরও, তার পরিবার আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সংগ্রাম করবে।
তিলোত্তমার পরিবার সঞ্জয়ের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও পূর্ণ সন্তুষ্টি পায়নি। তারা মনে করেন, সঞ্জয়ের মতো আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপেক্ষিত হয়েছে এবং প্রকৃত অপরাধীরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তবে, তিলোত্তমার মা ও বাবা আশাবাদী যে, আজকের রায়ের মাধ্যমে একটি বড় আইনি যুদ্ধের প্রথম ধাপ পেরিয়ে গেছেন।
তিলোত্তমার মা বলেন, “এই দীর্ঘ সময়ে যেভাবে মামলা চলেছে, তাতে কোনো ফল পাওয়া যায়নি, শুধু সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে।” তবে, তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, যতটা সম্ভব আইনি প্রক্রিয়ায় নিজেদের লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এছাড়া, তিলোত্তমার বাবা-মা এই মামলার তদন্তকারীদের প্রতি বেশ কড়া মন্তব্য করেছেন, বিশেষ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে। তারা বিশ্বাস করেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে সন্দীপ ঘোষের মতো অপরাধীরা শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।
অতএব, আজকের রায় যেন শুধুমাত্র একটি আইনি ধাপ, তিলোত্তমার পরিবার মনে করছে, সামনে আরো দীর্ঘ লড়াই বাকি। তাদের আশা, শেষ পর্যন্ত তারা তাদের মেয়ের জন্য সুবিচার পাবেন।