কলকাতা শহরের শিয়ালদহ কোর্ট চত্বরে সোমবার সকাল থেকেই কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কারণ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে খুন ও ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রাইকে আদালতে হাজির করতে চলেছে পুলিশ। আদালত চত্বরে ত্রিস্তরীয় গার্ডরেল স্থাপন করা হয়েছে এবং আশপাশের এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রিজন ভ্যানে সঞ্জয় রাইকে কোর্টে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ কনভয় তৈরি করেছে। সঞ্জয়ের গাড়ি, যেটি প্রিজন ভ্যানে ভরা, তাতে পুলিশ বাহিনীর দু’টি গাড়ি থাকছে, যার মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকজন ডিসি, এসি, ইন্সপেক্টর, এসআই, কনস্টেবল সহ বেশ কয়েকশো পুলিশ কর্মী থাকবেন। আশপাশের সব সিগন্যাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে সঞ্জয়ের গাড়ি নির্বিঘ্নে শিয়ালদহ কোর্টে পৌঁছাতে পারে।
প্রেসিডেন্সি জেল থেকে শিয়ালদহ কোর্টে যাওয়ার পথে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্সি জেলের বাইরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে, যাতে সঞ্জয়কে নিরাপদে আদালতে নিয়ে যাওয়া যায়। সঞ্জয়ের গাড়ির পাশে নিরাপত্তার জন্য র্যাফও মোতায়েন করা হয়েছে। জেল থেকে আদালতে যাওয়ার পথে কোনো গাড়ি বা ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ থাকে।
এছাড়া, আদালতের সামনে ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি মহিলাদের জন্য আলাদা পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। প্রায় ৩০০ জন কনস্টেবল, ২ জন ডিসি, ৫ জন এসি, ১৪ জন ইন্সপেক্টর, ৩১ জন এসআই, ৩৯ জন এএসআই এবং ৮০ জন মহিলা পুলিশ মিলে একটি বিশাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে।
সঞ্জয় রাইকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের খুন ও ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সঞ্জয়কে—বিএনএস ৬৪, ৬৬ ও ১০৩(১) নম্বর ধারায়। একটির মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অন্যটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং একটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড হতে পারে, যা সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে। বিচারক জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাজা ঘোষণা করবেন এবং সঞ্জয়ের বক্তব্য শোনার পর তিনি রায় দেবেন।
এদিন আদালত চত্বরে সঞ্জয়ের উপস্থিতি নিয়ে একটি তীব্র উত্তেজনা ছিল, কারণ তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খুবই সংবেদনশীল এবং গণমাধ্যমের নজরও ছিল প্রবল। তার বিরুদ্ধে আদালতে শুনানি চলাকালীন পুলিশ এবং মিডিয়ার উপস্থিতি সুনির্দিষ্টভাবে চোখে পড়েছে, কারণ এই মামলার গুরুত্ব অনেক বেশি।
এমনকি শিয়ালদহ কোর্টের আশপাশের এলাকাতেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, যাতে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দেওয়া হবে সোমবার দুপুরে, যা কলকাতা সহ গোটা রাজ্যের নজরে থাকবে।