অপরাজিত গোয়ার বিরুদ্ধে কি হবে নতুন লাল-হলুদ ট্যাকটিস ?

নতুন বছরে সমর্থকদের নতুন আলোর দিশা দেখাতে চেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কোচ অস্কার ব্রুজোন (Oscar Bruzon)। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা দু’বারই ব্যর্থ হয়। মাঠে নামলেও তাঁর…

East Bengal FC footballer Madih Talal & Dimitrios Diamantakos share secret

নতুন বছরে সমর্থকদের নতুন আলোর দিশা দেখাতে চেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কোচ অস্কার ব্রুজোন (Oscar Bruzon)। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা দু’বারই ব্যর্থ হয়। মাঠে নামলেও তাঁর দল এখনও জয় পায়নি। মুম্বই সিটি এফসি এবং পরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের কাছে হারের পর আজ তাদের মান বাঁচানোর লড়াই। চোট-আঘাত ও কার্ড সমস্যায় জর্জরিত ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। কাকে রাখবেন প্রথম একাদশে সেই নিয়েই ভাবনা ব্রুজোনের। তবে তার উপর ভরসা রয়েছে অগণিত সমর্থকদের। আশা রাখা যায় তিনি এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। রবিবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে নামবে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে। মারগাঁও জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ঘরের মাঠে খেলবে গোয়া। ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য প্রথম লিগের সেই কাঙ্ক্ষিত জয় এবারও ধরে রাখা। বর্তমানে গোয়া পয়েন্ট টেবিলে প্রথম চারের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।

ইস্টবেঙ্গলের চোটের সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালাল পুরো মরশুমের জন্য ছিটকে গিয়েছেন। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সল ক্রেসপো ও হেক্টর ইউস্তেও ফিট নন। চোটের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ডিফেন্ডার মহম্মদ রকিপ ও প্রভাত লাকরা। দলের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ক্লেটন সিলভা পুরোপুরি ফিট নন। মিডফিল্ডার শৌভিক চক্রবর্তীও চোট সারিয়ে ফিরে এলেও লাল কার্ডের কারণে এই ম্যাচে খেলতে পারবেন না। পাশাপাশি আনোয়ারও পায়ে চোট লাগার কারণে প্রায় তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে। তবে নজর থাকবে দলের নতুন স্ট্রাইকার রিচার্ড সেলিসের দিকে। তিনিই কি হয়ে উঠবেন ব্রুজোনের নতুন তুরুপের ত্রাস? প্রশ্ন সেই দিকে।

   

অন্যদিকে গোয়া নতুন বছরে তিনটি ম্যাচের মধ্যে একটিতে জয় পেয়েছে। শেষ দু’টি ম্যাচ ড্র। টানা ১০ ম্যাচ তারা অপরাজিত। হারিয়েছেন মোহনবাগানকেও।

গোয়ার দলের সর্বোচ্চ স্কোরার আরমান্দো সাদিকু গত ম্যাচে গোল করতে পারেননি। ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ পাঁচ গোল করে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। গোয়া গত ১৫টি ম্যাচে একটি করে গোল পেয়েছে  এবারও জেতার লক্লষ্ক্ষ্যেযে রয়েছে তারা।  
গত শনিবার বেঙ্গালুরু এফসি হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জয় না পাওয়ায় আজ তাদের কাছে সুযোগ আছে সেই জায়গা নেওয়ায়। সেক্ষেত্রে লিগ টেবিলে মোহনবাগানের পরেই থাকবে তাদের নাম। কিন্তু গত দশটি ম্যাচে অপরাজিত থাকলেও এর মধ্যে মাত্র তিনবার ক্লিন শিট রাখতে পেরেছে তারা। সন্দেশ ঝিঙ্গন, ওদেই ওনাইন্দিয়া, জয় গুপ্তাদের মতো ডিফেন্ডার থাকতেও কেন এই অবস্থা তা নিয়ে প্রশ্ন জাগছে। ইস্টবেঙ্গলের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে উঠতে পারে এটি।

ইস্টবেঙ্গল কোচ শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “নতুন যে স্ট্রাইকার এসেছে, রিচার্ড সেলিস, ওকে সবে দু’টো অনুশীলনে দেখলাম। এই আবহাওয়া, আর্দ্রতার সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া ওর পক্ষে কঠিন। লম্বা সফর করে এসেছে ও। তার আগে দেড় মাস কোনও ম্যাচ খেলেনি। তবে অনুশীলনের মাঠে ওকে দেখে ভাল লেগেছে। ধারালো, ভাল মানের ও শক্তিশালী খেলোয়াড়। আমাদের গোলের খরা মেটাতে পারে ও। সেলিসের জন্য ফাইনাল থার্ডে আমরা আরও তৎপর হয়ে উঠতে পারি”। কিন্তু এখনই তা সম্ভব কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত নন অস্কার।
গত আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসকে নিয়ে লাল-হলুদ সমর্থকদের আশা ছিল আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু এবছর তিনি আশানরুপ ফল করতে পারেননি।
লাল-হলুদের দিমি-কে নিয়ে এদিন কোচের বক্তব্য, “দিমিত্রি একজন ভাল স্ট্রাইকার, যে বক্সে খেলে। বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসে নিজেই গোল তৈরি করে নেওয়ার মতো খেলোয়াড় ও নয়। ওকে সাপ্লাই দিতে হবে। তা হলেই গোল করবে। উইংয়ে গিয়ে খেলতে পারবে না ও। বড়জোর একটু নীচে নেমে মাঝামাঠের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। কিন্তু ওকে ঠিকমতো গোলের বল দিতে হবে। দেখা যাক, সউল ফিরে এলে, ক্লেটন ও দিমি একটু ভাল জায়গায় পৌঁছতে পারে কি না। গত বছর কেরালা ব্লাস্টার্সে যে জায়গায় ছিল দিমি, সবচেয়ে বেশি গোল করেছিল, সেই জায়গায় পৌঁছতে পারে কি না। ফর্মের অভাব ও সাপ্লাইয়ের অভাবই ওর প্রধান সমস্যা”।

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ৯ বার। গোয়া জিতেছে ৬ বার। ইস্টবেঙ্গল একবার। বাকি দু’বার ড্র হয়েছে। দুই দলের মধ্যে লড়াইয়ে মোট ৩২ গোল হয়েছে। এফসি গোয়া দিয়েছে ১৯ গোল ও ইস্টবেঙ্গল দিয়েছে ১৩ গোল। দু’বারই ড্র হয় ১-১-এ, ২০২০-২১ মরশুমে। ২০২১-২২ মরশুমে প্রথম লেগে এফসি গোয়া ৪-৩-এ জেতে এবং ফিরতি লেগে ২-১-এ জিতে তার বদলা নেয় ইস্টবেঙ্গল। ২২-২৩ মরশুমের প্রথম সাক্ষাতে ২-১-এ জেতে এফসি গোয়া। দ্বিতীয় লড়াইয়ে ৪-২-এ জেতে তারা। গত মরশুমেও সেই জয়ের ধারা বজায় রাখে আরব সাগর পাড়ের দল ও জেতে ২-১ ও ১-০-য়। এ বারও সেই ধারা অব্যহত রয়েছে। প্রথম লিগে গোয়ার দল জেতে ৩-২-এ।

ইস্টবেঙ্গল সম্ভাব্য একাদশঃ- প্রভসুখান সিং গিল, লালচুংনুঙ্গা, হিজাজি মাহের, হেক্টর ইউস্তে, নন্দ কুমার, জেকসন থাওনাওজাম, পিভি বিষ্ণু, ভি পুথিয়া ভ্যালাপ্পিল, দিমিত্রিয়োস ডায়মান্তাকস, ক্লিটন সিলভা, ডেভিড লালহলানসাঙ্গা।

এফসি গোয়া সম্ভাব্য একাদশঃ- হৃতিক তিওয়ারি, ওদেই ওনাইন্ডিয়া, বরিস সিং থাংজাম, সন্দেশ ঝিঙ্গান, জয় গুপ্তা, কার্ল ম্যাকহুগ, সাহিল তাভোরা, মোহাম্মদ ইয়াসির, দেজান ড্রাজিক, ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ, আরমান্দো সাদিকু।