ইস্টবেঙ্গলের উদ্যোগে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলকে সংবর্ধনা

আজ, শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাদের প্রাঙ্গণে একটি বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে, যেখানে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা ফুটবল দলকে (Bengal Football Team) সম্মান জানানো হয়।…

East Bengal Club Honors Santosh Trophy Winning Bengal Football Team

short-samachar

আজ, শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাদের প্রাঙ্গণে একটি বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে, যেখানে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা ফুটবল দলকে (Bengal Football Team) সম্মান জানানো হয়। বাংলার ফুটবল দলের ঐতিহাসিক এই সাফল্যকে স্বীকৃতি জানাতে ক্লাবের পক্ষ থেকে খেলোয়াড়দের হাতে ঘড়ি তুলে দেওয়া হয়, যা ছিল একটি বিশেষ স্মারক। এর মাধ্যমে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বাংলার ফুটবল দলের অভাবনীয় অর্জনকে সম্মানিত করার পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যৎ সাফল্যের জন্য শুভকামনা জানায়। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররা এবং অন্যান্য ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা।

   

রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য
এদিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন এবং সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা ফুটবলের ইতিহাসে এই জয় অত্যন্ত গৌরবময় এবং এটি শুধু বাংলার জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। বাংলা দল এবারের সন্তোষ ট্রফি জিতে নিজেদের প্রমাণ করেছে, এবং তাদের এই জয়ের মাধ্যমে বাংলার ফুটবল নতুন করে আলোচিত হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার খেলা ও ক্রীড়াবিদদের জন্য সবসময় সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করবে। বাংলার ফুটবল উন্নত করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং খেলোয়াড়দের জন্য সর্বোত্তম সুযোগ তৈরি করবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলা দলের এই সাফল্য শুধু তাদের দক্ষতা ও পরিশ্রমের ফল নয়, বরং এটি বাংলার ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতির একটি নতুন দিশাও দেখায়।’’

প্রাক্তন ফুটবলারদের উপস্থিতি ও অনুপ্রেরণা
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের একঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলার, যাঁরা একসময় ক্লাবের হয়ে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছিলেন। প্রাক্তন ফুটবলাররা তরুণ দলের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনারা যে প্রতিভা প্রদর্শন করেছেন, তা আমাদের গর্বিত করেছে। তবে, এটি শুধুমাত্র একটি পদক্ষেপ, আপনাদের আরও কঠোর পরিশ্রম এবং মনোযোগ দিয়ে ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে হবে।’’

এক প্রাক্তন ফুটবলার জানান, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। আমাদের সময় আমরা যে কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম, আজকের ফুটবলারদের জন্য সেটি একটি বড় অনুপ্রেরণা। আপনাদের মধ্যে যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা আগামী দিনে বাংলার ফুটবলকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’’

হকির জন্য নতুন অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরির ঘোষণা
এদিনের অনুষ্ঠানে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাদের মাঠে হকির জন্য নতুন অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নতুন অ্যাস্ট্রোটার্ফটি রেম্পার্ডের দিকে অর্থাৎ গোলপোস্টের পেছনে তৈরি হবে, যা হকি খেলার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানান, ‘‘নতুন অ্যাস্ট্রোটার্ফটি হকি দলের জন্য একটি উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যাতে খেলোয়াড়রা আরও দক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।’’

এই নতুন অ্যাস্ট্রোটার্ফের মাধ্যমে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব শুধু ফুটবল নয়, বরং হকি খেলার জন্যও একটি আধুনিক ও উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করতে চায়। ক্লাবের কর্মকর্তারা আশা করছেন, হকি খেলোয়াড়রা এই নতুন টার্ফে নিজেদের দক্ষতা আরও উন্নত করতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক স্তরে হকিতে সাফল্য অর্জন করবেন।

বাংলার ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য পদক্ষেপ
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এই পদক্ষেপ শুধু ফুটবল এবং হকির জন্য নয়, বরং বাংলার ক্রীড়াবিদদের উন্নতির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাংলার ক্রীড়া পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য রাজ্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে ক্রীড়াবিদদের জন্য আরও ভাল সুযোগ এবং পরিবেশ তৈরি হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এই ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করছে যাতে বাংলার ক্রীড়াবিদরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে আরও ভাল ফলাফল অর্জন করতে পারে।’’

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাংলার ফুটবল এবং ক্রীড়াজগতের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে। সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের খেলোয়াড়দের সম্মানিত করার মাধ্যমে ক্লাব তাদের প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ধরনের উদ্যোগ বাংলার ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি, হকির জন্য নতুন অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরির সিদ্ধান্ত বাংলার ক্রীড়াবিদদের আরও উন্নতির সুযোগ করে দেবে এবং ভবিষ্যতে বাংলার ক্রীড়াবিদরা আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে।