গাজায় ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতি নিয়ে মুখ খুলল ভারত

শেষমেষ শান্তির আলো গাজায় । দীর্ঘ ১৫ মাসের পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা । যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিযেছে দুই পক্ষই । ২০২৩ সালের ৭ ই অক্টোবর আচমকাই ইজরায়েলি…

শেষমেষ শান্তির আলো গাজায় । দীর্ঘ ১৫ মাসের পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা । যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিযেছে দুই পক্ষই ।
২০২৩ সালের ৭ ই অক্টোবর আচমকাই ইজরায়েলি সীমান্ত পেরিয়ে আকাশ এবং স্থলপথে আক্রমন চালিয়েছিল হামাস । ১২০০ জন সাধারণ মানুষ সহ সেনার প্রাণঘাতি ঘটে এই হামলায় । এর পাল্টা জবাব দেয় ইজরায়েলও । হামাসের ঘাঁটিতে ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে । গাজার বাড়িঘর,হাসপাতাল, স্কুল কোন কিছুর অস্তিত্ব রাখেনি ইজরায়েল । প্রায় ৫০০০০ হাজেরেরও বেশি মানুষ প্রান হারায় । ঘরছাড়াও হন বহু হাজার হাজার মানুষ ।

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার বিদায়ী ভাষণে ঘোষণা করেছেন গাজা সিজফায়ার-ফর-হোস্টেজ চুক্তিটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে । যা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কয়েক মাসের আলোচনার পর সম্পাদিত হয়েছে এবং ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়েছে । এই চুক্তিটি তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে পূর্ণ সিজফায়ার, গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং জিম্মিদের মুক্তি, যার মধ্যে আমেরিকানরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

   

প্রথম পর্ব –

বাইডেন ঘোযণা করেছেন, প্রথম পর্বটি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হবে এবং এতে “পূর্ণ এবং সম্পূর্ণ সিজফায়ার” হবে ।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন উল্লেখ করেছেন , এই পর্বে “হামাসের হাতে আটক বেশ কয়েকজন জিম্মি,” যাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক এবং অসুস্থরা অন্তর্ভুক্ত, তাদের মুক্তি দেওয়া হবে, অন্যদিকে কয়েকশো ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাবে । তবে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান বিন জাসিম আল থানি সাংবাদিকদের বলেছেন, মোট ৩৩ জন জিম্মি মুক্তি পাওয়া যাবে।

দ্বিতীয় পর্ব –

বাইডেন এর মতে, চুক্তির দ্বিতীয় পর্বটি হবে “যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি,” । এবং এতে জীবিত বাকি সমস্ত জিম্মি, যার মধ্যে পুরুষও অন্তর্ভুক্ত, তারাও মুক্তি পাবে, অন্যদিকে বন্দী ফিলিস্তিনিরাও মুক্তি পাবে ।
বাইডেন জানান , গাজা থেকে সমস্ত বাকি ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে এবং সাময়িক সিজফায়ারটি স্থায়ী করা হবে । পূর্বে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের জন্য বিস্তারিত আলোচনা সিজফায়ারের ১৬তম দিনে শুরু হবে।
হামাস ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ইসরায়েলে আক্রমণ করার সময় যে ২৫১ জন জিম্মি আটক করেছিল। তথ্য অনুযায়ী, তারা এখনো ৯৪ জনকে আটকে রেখেছে, যদিও ইসরায়েল বিশ্বাস করে তার মধ্যে এখনও বেঁচে আছেন ৬০ জন। এই সময়ে, ইসরায়েল প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, জিম্মিদের বিনিময়ে।

তৃতীয় পর্ব –

চুক্তির তৃতীয় পর্বে বা অন্তিম পর্বে বাইডেন বলেছেন,
গাজা পুনর্নির্মাণের কাজ অন্তর্ভুক্ত হবে, যা কয়েক বছর সময় লাগতে পারে । এবং যেসব জিম্মি মারা গেছেন তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
চুক্তির তৃতীয় পর্বে আরও বলা হয়ছে যে, যারা মারা গেছেন, তাদের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং গাজার জন্য একটি বড় পুনর্নির্মাণ পরিকল্পনা শুরু হবে ।

বাইডেন মন্তব্য করেছন , “যারা এই আলোচনাগুলি অনুসরণ করেছেন তারা প্রত্যয়িত করতে পারবেন যে, এই চুক্তিতে পৌঁছানো এত সহজ ছিল না। আমি কয়েক দশক ধরে বৈদেশিক নীতিতে কাজ করছি। এটি ছিল আমার জীবনের অন্যতম কঠিন আলোচনা। আমি এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছি কারণ ইসরায়েল হামাসের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ছিল”।

অন্যদিকে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই যুদ্ধবিরতির কথা বলেছে। পূর্বে এই নিয়ে আলোচনা হলেও, তা বার বার ব্যর্থ হয়েছে মূলত ইজরায়েলের আগ্রাসনে ফলে । তবে এবার ট্রাম্পের হুশিয়ারি কার্য়কর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ।

এই আবহে মুখ খুলছে ভারত সরকার। আজ বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানানো জানিযেছে ভারত । যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর ট্রাম্পকে ধন্যবাদও জানিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। এছাড়া যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনিও ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ।