সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে এক প্রসূতির মৃত্যু এবং আরও তিনজনের অবস্থা (Health department changes) আশঙ্কাজনক হওয়ার পর, স্যালাইন কাণ্ডে সৃষ্ট বিতর্ক তুঙ্গে পৌঁছেছে। অভিযোগ উঠেছে, স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থার ত্রুটির কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পরই স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে এবং আন্দোলনরত চিকিৎসকরা তাঁর অপসারণ দাবি করেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা মেনে নেননি, তবে এবার স্বাস্থ্য ভবনে কিছু বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের (Health department changes) সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি চৈতালী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি বুধবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে ঘোষণা করা হয়। চৈতালী চক্রবর্তী, যিনি এতদিন পর্যন্ত ড্রাগ অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট বিভাগের সচিব ছিলেন, স্যালাইন এবং ওষুধ সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ের তদারকি করতেন। তাঁর অধীনে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, তার মধ্যে ওষুধের বরাত এবং কোন সংস্থাকে কী ধরনের সাপ্লাই দেওয়া হবে, তা ছিল অন্যতম। তবে, এখন তাঁকে ওই বিভাগ থেকে সরিয়ে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শুভাঞ্জন দাসকে।
এদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের (Health department changes) ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে যে, স্যালাইনে ত্রুটি থাকার কারণেই প্রসূতির মৃত্যু এবং অন্যান্য প্রসূতির স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য দফতর স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং আরও তদন্ত চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়।
সোমবার, মুখ্যমন্ত্রী মমতার নির্দেশে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ স্বাস্থ্য সচিবকে তীব্রভাবে ভর্ৎসনা করেছেন এবং স্যালাইন কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করেন।
এদিকে, স্বাস্থ্য ভবনে এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ, বুধবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি একটি অভিযান চালায়। বিজেপি দলের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের অবহেলা ও দুর্বলতা তুলে ধরা হয়। বিজেপির দাবি, স্যালাইন কাণ্ডের জন্য প্রশাসনিক তৎপরতা সঠিক ছিল না এবং এটি সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা হচ্ছে।
এই রদবদলের পর, স্বাস্থ্য ভবনে আরও পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে। চৈতালী চক্রবর্তীকে সরানো হলেও, স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এখনও তাঁর পদে বহাল আছেন। তবে, স্যালাইন কাণ্ডের পর প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ এই ঘটনার পর আরও অনেক প্রশ্ন উঠে এসেছে প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বিষয়ে।
এখন দেখার বিষয়, এই পরিবর্তনের পর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কী ধরনের উন্নতি হয় এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে প্রশাসন আরও কী পদক্ষেপ নেয়।