নীতিশ রেড্ডির ভাইরাল ভিডিয়ো, নির্বাক ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা

ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিভাবান অলরাউন্ডার (India all-rounder) নীতীশ কুমার রেড্ডির (Nitish Kumar Reddy) নাম এখন সবার মুখে মুখে। সম্প্রতি বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে (Border Gavaskar Trophy) তাঁর দুর্দান্ত…

Nitish Kumar Reddy climbs Tirupati Temple

ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিভাবান অলরাউন্ডার (India all-rounder) নীতীশ কুমার রেড্ডির (Nitish Kumar Reddy) নাম এখন সবার মুখে মুখে। সম্প্রতি বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে (Border Gavaskar Trophy) তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিশেষত আইপিএলে (IPL) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে নজর কাড়ার পর জাতীয় দলে সুযোগ পান তিনি। তবে নীতীশের ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হল, অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে বক্সিং ডে টেস্টে (Boxing Day Test) শতরান করা। এই কৃতিত্ব তাঁকে শুধু দলের মধ্যে নয়, দেশের মধ্যেও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।

এই সাফল্যের পর, নীতীশ কুমার রেড্ডি একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ধন্যবাদ জানাতে তিরুমালা পর্বতের ওপরে অবস্থিত তিরুপতি বালাজির মন্দিরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি হাঁটু ভেঙে সিঁড়ি দিয়ে উঠে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চান। এই ঘটনা একদিকে যেমন তাঁর আধ্যাত্মিকতা ও ভক্তির পরিচয় দেয়, তেমনি অন্যদিকে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধার কথাও তুলে ধরে।

   

ভারতীয় ক্রিকেটে এমন অনেক ক্রিকেটার রয়েছেন যারা ধর্মীয় বিশ্বাসে দৃঢ়। তাঁরা মাঠে কৃতিত্ব অর্জনের পাশাপাশি, ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে মন্দির বা মসজিদে যান। গত বছর, আইপিএল শুরুর আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড়রা কালিঘাট মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে এসেছিলেন। এরপর তারা আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয় এবং দশ বছরের ট্রফির খরা কাটে, যা তারা ঈশ্বরের আশীর্বাদ হিসেবে ধরে নেয়। বিরাট কোহলি ও তাঁর পরিবারও মাঝে মধ্যেই আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক রক্ষা করেন, যেমন তারা বৃন্দাবনের স্বামী প্রেমানন্দজি মহারাজের আশ্রমে গিয়েছিলেন।

নীতীশ কুমার রেড্ডি, যিনি অন্ধ্রপ্রদেশের একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার, সম্প্রতি তিরুপতি বালাজি মন্দিরে যে ধরনের ভক্তির প্রদর্শন করেছেন, তা ক্রিকেট মাঠে তার সাফল্যের সঙ্গেই এক ধরনের সংযোগ স্থাপন করেছে। তাঁর বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা ও খোদ ঈশ্বরের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানো এই মুহূর্তে ভক্তদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এটি তাঁর ব্যক্তিত্বের আরেকটি দিককে তুলে ধরেছে, যেখানে তিনি শুধু একজন ক্রিকেটার নন, বরং একজন আধ্যাত্মিক মানুষ হিসেবেও নিজের পরিচয় দিচ্ছেন।

নীতীশ কুমার রেড্ডির ২০২৪ সালটি ছিল অত্যন্ত সাফল্যমণ্ডিত। তিনি প্রথমে আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে নজর কাড়েন, তারপর জাতীয় দলে সুযোগ পান এবং টি২০ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন। আর সবচেয়ে বড় অর্জন হল, বর্ডার-গাভাসকার সিরিজে তার শতরান। এই সিরিজে একদিকে ভারতীয় দলের জন্য হতাশাজনক পরিণতি ছিল, তবে অন্যদিকে নীতীশ কুমারের পারফরম্যান্স ছিল অন্যতম উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির প্রথম টেস্টের পরপরই এক বিশাল চাপের মুখে ছিল ভারতীয় দল। যেই সময়ে দলের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই ব্যর্থ হচ্ছিলেন, ঠিক তখনই নীতীশ কুমার রেড্ডি এসে একটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন এবং দলের পতন রোধ করেন। পরবর্তীতে মেলবোর্নে সেঞ্চুরি করেন, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক শতরান। এমন একটি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার মত শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলের একজন নবীন খেলোয়াড়ের এমন কৃতিত্ব, তা নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য।

নীতীশ কুমারের এই সাফল্যের পর, তাকে বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দরে রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাঁর গন্তব্য ছিল তিরুপতি মন্দির, যেখানে তিনি হাঁটু ভেঙে একের পর এক সিঁড়ি টপকে ওঠেন। এমন দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার পর ভাইরাল হয়ে যায় এবং নীতীশের ভক্তরা তাঁর এই ভক্তির প্রতি প্রশংসা জানাতে পিছপা হননি।