খয়ে যাচ্ছে নদী, বাড়ছে এভারেস্টের উচ্চতা! হিমালয়ে হচ্ছেটা কী?

পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের (Mount Everest) উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। নতুন এক জরিপে দেখা গিয়েছে এমনটাই। হঠাৎ করেই পর্বত চূড়ার উচ্চতা বেড়ে গেছে অনেকটাই। কোথাও…

detailed map of the Himalayan region showing the height increase of Mount Everest

পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের (Mount Everest) উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। নতুন এক জরিপে দেখা গিয়েছে এমনটাই। হঠাৎ করেই পর্বত চূড়ার উচ্চতা বেড়ে গেছে অনেকটাই। কোথাও ১৫ মিটার, কোথাও বা ৫০ মিটার। কিন্তু এর কারণ কী? না, এতদিন মাপের হিসাবে কোনো ভুল হয়নি, আবার সেই ভুল সংশোধনও হয়নি। ঘটনা ঘটেছে অন্য জায়গায়।

এভারেস্টের পাদদেশ দিয়ে যে নদী বয়ে গেছে, সেটিতে ভূমিক্ষয়ে বেড়ে গেছে পর্বতের উচ্চতা। পাথর ও মাটি সরে যাচ্ছে নদীবক্ষ থেকে, তারই চাপ লাগছে মাউন্ট এভারেস্টে। সেই চাপেই তা আকাশের পানে ছুটে চলেছে। চীন ও নেপালের সীমান্তে অবস্থিত মাউন্ট এভারেস্ট। শৃঙ্গটির উত্তরভাগ চীনের সীমানায় পড়ে।

   

ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, তার একটি উপমা দিয়েছেন বিজ্ঞানী অ্যাডাম স্মিথ। তিনি তুলনা করেছেন পণ্যবাহী জাহাজ থেকে মালপত্র ফেলে দেওয়ার সঙ্গে। জাহাজ থেকে মালামাল ফেলে দিলে সেটি কিছুটা ওপরে ভেসে থাকতে পারে। ভূ-ত্বকের ক্ষরণ হলে পর্বতশৃঙ্গটিও এভাবেই কিছুটা ওপরে উঠে যাচ্ছে।

চার থেকে পাঁচ কোটি বছর আগে মাটির নিচে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান প্লেটের মধ্যে ধাক্কায় জন্ম হয় হিমালয় পর্বতের। সেই ধাক্কার প্রভাব এখনও রয়ে গেছে। হিমালয়ের উচ্চতা কিন্তু বেড়েই চলেছে। তাতে বাড়তি শক্তি জুড়িয়েছে অরুণ নদী। হিমালয়ের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়ার পথে অরুণ নদী নদী পাথর ও মাটি কেটে নিয়ে যায়। ফলে ভূত্বকের ঠিক নিচে ম্যান্টেল নামের যে স্তরটি রয়েছে তা ওপরের দিকে ফুলে ওঠে। এই প্রক্রিয়াটিকে ভূবিজ্ঞানের তত্ত্বে বলা হয় আইসোস্ট্যাটিক রিবাউন্ড।

গবেষণাপত্রটি প্রকাশ হয়েছে নেচার জিওসায়েন্স পত্রিকাতেও। এতে বলা হয়েছে, এভারেস্ট ও সেটির কাছাকাছি অঞ্চলের অন্যান্য পর্বতশৃঙ্গগুলোও একই কারণে ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। এভারেস্ট ছাড়াও বাড়ছে বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ লোৎসে এবং ও পঞ্চম সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাকালুর উচ্চতাও। জিপিএস যন্ত্র ব্যবহার করে গবেষকরা এভাবে উচ্চতা বৃদ্ধির প্রমাণ পেয়েছেন। ফলে সেটি কেবল ধারণার কথা নয়।