নতুন বছরে জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC) তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০২৫ সালের প্রথম দুটি ম্যাচেই জয় লাভ করেছে। প্রথমে ৪ঠা জানুয়ারি শক্তিশালী বেঙ্গালুরু এফসিকে পরাজিত করে দলটি আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ হয়ে ওঠে। পরে ৭ই জানুয়ারি মুম্বাই সিটি এফসিকেও ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করে তারা। এই দুটি জয় জামশেদপুরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, বিশেষ করে তাদের লক্ষ্য ছিল আইএসএলের পয়েন্ট টেবিলে উন্নতি ঘটানো এবং শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করা।
বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে জয়
জামশেদপুর এফসি ২০২৫ সালের প্রথম ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসিকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। এটি দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ বেঙ্গালুরু একটি শক্তিশালী দল, যারা আইএসএলে নিয়মিতভাবে শীর্ষস্থান দখল করে থাকে। সেই ম্যাচে জামশেদপুরের খেলা ছিল উজ্জ্বল, এবং দলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স সকলকে আশাবাদী করে তোলে। খালিদ জামিল, জামশেদপুর এফসির কোচ, সেদিন বলেন, “আমাদের খেলোয়াড়রা যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, এবং এর ফলস্বরূপ এই সাফল্য এসেছে। এটি দলের মনোবল বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
মুম্বাই সিটি এফসির বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক জয়
এরপর ৭ই জানুয়ারি জামশেদপুর এফসি মুম্বাই সিটি এফসিকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে। এই জয় দলটির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল, কারণ মুম্বাই সিটি এফসি বর্তমানে আইএসএলের অন্যতম শক্তিশালী এবং সেরা দলগুলোর মধ্যে একটি। তারা গত বছর আইএসএল চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল। তবে জামশেদপুর তাদের ঐতিহাসিক শক্তিকে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে জামশেদপুর এফসি তাদের শক্তি প্রমাণ করলো এবং আইএসএলের পয়েন্ট টেবিলেও নিজেদের জায়গা আরো শক্ত করে রাখলো। দলটির হয়ে গোল করেছেন মহম্মদ শানন, জর্ডান মারি এবং জাভি হার্নান্দেজ। ম্যাচ শেষে খালিদ জামিল সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের দল দুর্দান্ত খেলেছে। প্রতিটি খেলোয়াড় নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। বিশেষভাবে জাভি হার্নান্দেজের খেলা ছিল অসাধারণ। তবে তার সঙ্গে সঙ্গে জর্ডান মারি, লাজার সিরকোভিচ, প্রতীক চৌধুরী এবং নিখিল বার্লার মতো ফুটবলাররাও নিজেদের পারফরম্যান্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”
আইএসএলের পয়েন্ট টেবিল ও জামশেদপুরের অবস্থান
এই জয়ের মাধ্যমে জামশেদপুর এফসি ১৪ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে আইএসএলের পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। দলটির এখন লক্ষ্য আরও ভালো খেলে শীর্ষস্থান ধরে রাখা। মুম্বাই সিটি এফসির বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জয় ছাড়াও তারা আরো অনেক বড় দলের বিপক্ষেও দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। এই জয় তাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।
আগামী ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিপক্ষে প্রস্তুতি
জামশেদপুর এফসি আগামী ১৭ই জানুয়ারি নিজেদের ঘরের মাঠে খেলবে শক্তিশালী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে। মোহনবাগান বর্তমানে আইএসএল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে রয়েছে এবং তাদের শক্তি দুর্দান্ত। গত ম্যাচেই তারা ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে পরাজিত করেছে। খালিদ জামিল জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা শীর্ষস্থান ধরে রাখা দল মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলব। প্রথম লেগে আমরা তাদের কাছে পরাজিত হয়েছিলাম, কিন্তু এবার আমাদের লক্ষ্য তাদের বিরুদ্ধে সঠিক উপায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। হোম ম্যাচ হওয়ায় আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই লড়াই করতে হবে।”
জামশেদপুরের নতুন চ্যালেঞ্জ
জামশেদপুর এফসির শুরুটা খুব একটা ভালো না হলেও সময়ের সঙ্গে তারা উন্নতি করেছে এবং এখন একে অপরের প্রতি আস্থা রেখে শক্তিশালী দল হিসেবে গড়ে উঠেছে। খেলোয়াড়রা তাদের সেরাটা দিয়েছে এবং দলটি নিজেদের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে খেলে চলেছে। গত বছর শেষ হওয়া জয়ের পর চলতি বছরের প্রথম দুটি ম্যাচে সাফল্য এসেছে, এবং দলটি এখন আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। তবে, সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। বিশেষ করে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে তারা কিভাবে খেলে, সেটি দেখার বিষয়।
জামশেদপুরের সমর্থকরা এখন তাদের দলকে আগের মতো সফল দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। এবং খালিদ জামিলের কৌশল, তার নির্বাচিত ফুটবলাররা কিভাবে মাঠে পারফর্ম করে, সেটিই দলটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। দলটির সাম্প্রতিক ফর্ম দেখে বোঝা যাচ্ছে যে তারা আইএসএলে শীর্ষস্থান অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
জামশেদপুর এফসি বর্তমানে তাদের সেরা পারফরম্যান্স দিয়ে সকলকে মুগ্ধ করেছে। আগামী ম্যাচগুলোর জন্য তারা প্রস্তুত। খালিদ জামিলের নেতৃত্বে দলটি তাদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে বদ্ধপরিকর এবং একে অপরকে সমর্থন দিয়ে তারা লিগের শীর্ষে জায়গা করে নিতে চায়।