সমকামী বিবাহ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিরাট ঘোষণা

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে, ভারতের শীর্ষ আদালত(Supreme Court) সমকামী বিবাহের বৈধতা সম্পর্কে তার রায় দেয়। এতে আদালত সমকামী বিবাহকে বৈধ করার ক্ষেত্রে কোনো আইনি অনুমোদন…

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে, ভারতের শীর্ষ আদালত(Supreme Court) সমকামী বিবাহের বৈধতা সম্পর্কে তার রায় দেয়। এতে আদালত সমকামী বিবাহকে বৈধ করার ক্ষেত্রে কোনো আইনি অনুমোদন দেওয়ার পক্ষে ছিল না। আদালতের এই রায়ের পর, কিছু আবেদনকারী এই রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court) আবেদন করেন। তবে, শীর্ষ আদালত (Supreme Court) তাদের আবেদন গ্রহণ করেনি, এবং আবেদনগুলি খারিজ করে দিয়েছে।

এই রায়ের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যে বিশেষ খবরটি সামনে এসেছে তা হলো, সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানায় যে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের রায়ে কোনো ‘স্পষ্ট ত্রুটি’ নেই, এবং এ কারণে তার পুনঃমূল্যায়ন বা সংশোধনের প্রয়োজন নেই। আদালত (Supreme Court) আরও জানায় যে, ওই রায়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা আইনের সঙ্গত এবং কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। আদালত তাদের পর্যালোচনাতে দাবি করেছে যে, তারা বিচারপতি রবিশঙ্কর ভাট যিনি নিজে এবং বিচারপতি হিমা কোহলির সাথে রায় দিয়েছিলেন এবং বিচারপতি পিএস নারসিমহার রায় পর্যালোচনা করেছেন এবং সেখানে কোনো ভুল বা অসঙ্গতি খুঁজে পাননি।

   

অক্টোবর ২০২৩ সালের রায়ের মূল দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে, বিবাহের ক্ষেত্রে আইনি অধিকার শুধুমাত্র সেসব সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যা আইনের দ্বারা স্বীকৃত। আদালত আরও বলেছেন যে, সমকামী সম্পর্ক এবং তাদের অধিকার নিয়ে কেন্দ্রের যুক্তি সঠিক নয়, কারণ ‘কুইয়ার’ বা সমকামী হওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র শহুরে বা উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই সম্পর্কগুলি প্রাচীনকাল থেকে স্বীকৃত ছিল, শুধু যৌন সম্পর্কের জন্য নয়, বরং একটি আবেগিক সম্পর্কের নিদর্শন হিসেবেও।

আদালতের (Supreme Court) সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে, যে বিচারপতিরা রায়ের পুনঃমূল্যায়ন করেন, তারা মনে করেন যে, ২০২৩ সালের রায়ের পক্ষে সঠিক বিচারিক যুক্তি ছিল এবং আইনের দৃষ্টিতে এতে কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, যিনি বর্তমানে ভারতের প্রধান বিচারপতি, তিনি এই পুনর্বিবেচনার শুনানি থেকে সরে যান, এবং রিভিউ বেঞ্চে কেবলমাত্র বিচারপতি পিএস নারসিমহা ছিলেন, যিনি মূল সংবিধান বেঞ্চে ছিলেন এবং সুতরাং তার উপস্থিতি এই রায়ের ধারাবাহিকতা ও প্রাসঙ্গিকতাকে তুলে ধরে।

এই রায়টি ভারতের আইনি এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে, যেখানে সমকামী সম্পর্কের অধিকার ও মর্যাদাকে আইনের চোখে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও, বিবাহের আইনি অধিকার প্রদান এখনও একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে রয়ে গেছে। আদালত জানিয়েছে যে, রাষ্ট্রীয় ও সমাজের নীতি সমকামী সম্পর্কের আইনি স্বীকৃতি প্রদান না করলেও, মৌলিক অধিকার ও সাংবিধানিক মূল্যবোধের আলোকে এই ধরনের সম্পর্কের মর্যাদা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।

এছাড়া, আদালত সমকামীদের অধিকার সম্পর্কে একটি গভীর সামাজিক আলোচনা উন্মোচিত করেছে, যেখানে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের মধ্যে এর গ্রহণযোগ্যতা এবং তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের মর্যাদাকে সম্মানিত করার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।