কোচবিহারে বিদেশি মুদ্রা-সহ গ্রেফতার ৭ বাংলাদেশি

কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ সীমান্তে ৭ বাংলাদেশি নাগরিককে (Bangladesh nationals) গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫৩ হাজার ভারতীয় টাকা এবং কাতারের মুদ্রা ১ রিয়াল উদ্ধার করা…

bsf issues ops alert in india bangladesh boarder

কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ সীমান্তে ৭ বাংলাদেশি নাগরিককে (Bangladesh nationals) গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫৩ হাজার ভারতীয় টাকা এবং কাতারের মুদ্রা ১ রিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে। বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিল।

বিএসএফ-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে নজরদারি চালানোর সময় সন্দেহভাজনদের চলাচল লক্ষ্য করা হয়। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় বিএসএফ সদস্যরা তাদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, অভিযুক্ত ৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পরিকল্পনা করছিলেন।

   

তাদের কাছ থেকে ৫৩ হাজার ভারতীয় টাকা উদ্ধার করা হয়, যা সন্দেহ করা হচ্ছে অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও, কাতারের মুদ্রা ১ রিয়াল উদ্ধার হয়েছে। এই মুদ্রা কীভাবে তাদের হাতে এলো এবং এর সঙ্গে কোনো আন্তর্জাতিক মুদ্রা পাচার চক্র জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনায় বিএসএফ আরও দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, তারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের সাহায্য করছিলেন। তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে, তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে।

গ্রেফতারকৃতদের মেখলিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গ্রেফতারকৃতদের ভারতে প্রবেশের সময়, মাধ্যম এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, উদ্ধারকৃত অর্থ এবং বিদেশি মুদ্রার উৎস এবং উদ্দেশ্য নিয়েও তদন্ত চলছে।

এই ঘটনার পর বিএসএফ সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও বাড়িয়েছে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে অতিরিক্ত নজরদারি ক্যামেরা এবং সশস্ত্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিএসএফ-এর একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, “সীমান্ত পেরোনোর ঘটনা রুখতে আমরা সর্বদা সতর্ক রয়েছি। তবে কিছু চক্র এই ধরনের কার্যকলাপ চালানোর চেষ্টা করছে। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কোচবিহারের সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই অনুপ্রবেশ, মাদক পাচার এবং মুদ্রা পাচারের জন্য কুখ্যাত। এই ধরনের ঘটনা সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, সীমান্তে অবৈধ কার্যকলাপের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা চাই সীমান্তে কঠোর নজরদারি রাখা হোক। এভাবে যদি অবৈধ কার্যকলাপ চলতে থাকে, তাহলে আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকতে বাধ্য হব।”

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং পাসপোর্ট আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে তাদের সহযোগিতা করার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকে কোচবিহার সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে কাজ করছে যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানো যায়।