৫০ বছর আগেই পৃথিবীতে এসেছিল HMPV, কারা আক্রান্ত হয়েছিল জানেন?

আবার খবর। আবার সংক্রমণ। আবার সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম। আবার আতঙ্কের বাতাবরণ। কোন সংবাদ মাধ্যম বাদ নেই যারা হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (HMPV) নিয়ে খবর করেনি। শুরু…

Human Metapneumovirus Know About Its Symptoms, Spread, and Precautions

short-samachar

আবার খবর। আবার সংক্রমণ। আবার সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম। আবার আতঙ্কের বাতাবরণ। কোন সংবাদ মাধ্যম বাদ নেই যারা হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (HMPV) নিয়ে খবর করেনি। শুরু হয়েছে আবারও ভয়, আতঙ্ক। চিকিৎসক দীপঙ্কর মান্না বলছেন, এর আগে একই ধরনের ভাইরাস (এভিয়ান মেটানিউমো ভাইরাস) শনাক্ত করা হয় আনুমানিক ১৯৭০ সালে যা শুধুমাত্র পাখিদের দেহে সংক্রমণ করতে পারে। হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস তারই একই রূপবিশেষ।

   

চিকিৎসক বলছেন, ‘সংবাদ শিরোনামের মূল বিষয় গত ডিসেম্বরে ঘটে যাওয়া হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব। যা নিয়ে সবচেয়ে বেশী শোরগোল পড়েছে। সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগ জাগাটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে স্বভাবসিদ্ধভাবেই চলছে সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেন।’

তাঁর কথায়, ‘হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণ কোন আতঙ্কের বিষয় নয়। হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণ অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ যেমন – আরএসভি কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জা র মতোই এক ধরনের সংক্রমণ, যা মূলত শ্বাসযন্ত্রের উপর এবং নিম্ন অংশে সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণ শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়েসের মানুষের দেহে ঘটতে পারে। উপসর্গ আরএসভি বা ইনফ্লুয়েঞ্জা র মতোই যা ২-৫ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। কিন্তু শিশু কিংবা বয়স্কদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে কিংবা দীর্ঘমেয়াদী কোন অসুখ (যেমন – এসমা, সিওপিডি ইত্যাদি) আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ বিপজ্জনক হতে পারে। তাই তাদের সাবধানতা বিশেষ জরুরী।’

Human Metapneumovirus Know About Its Symptoms, Spread, and Precautions

তিনি এও জানিয়েছেন, ‘মূল উপসর্গ কাশি, সর্দি, নাক দিয়ে জল গড়ানো, জ্বর এবং গলা ব্যাথা। হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। ফ্লু ভাইরাসের মতো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সংক্রমণও সেরে যায় নিজের থেকেই। তাই কোন ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। মুড়িমুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক গেলারও দরকার নেই। প্রয়োজনে ওষুধ দেওয়া হলেও তা মূলত উপসর্গ কমাতে। তবে বিপজ্জনক রোগীদের ক্ষেত্রে সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণকারী অন্যান্য ভাইরাসের মতো হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসও ছোঁয়াচে। তাই কারো এই সংক্রমণ হলে তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। যা আমরা সফল্যের সাথে করে এসেছি করোনা অতিমারির সময়।’

প্রসঙ্গত, হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শীতের সময়ই বেশী দেখা যায়। এই সংক্রমণ বেশিরভাগ সময় সাধারণ ফ্লুর মতোই মৃদু হয়ে থাকে। তাই হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে নিজে চিকিৎসক হওয়ার দুঃসাহস দেখাবেন না। তাতে জটিলতা বাড়তে পারে। মানুষকে সচেতন করে ডাঃ মান্না বলেছেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে অযথা উদ্বেগের কারণ নেই। সঠিক তথ্য জানার জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক পত্রিকা পড়ুন। কিংবা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নিয়ামক সংস্থার নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে করোনা অতিমারির দ্বিতীয় পর্যায়ের সাথে তুলনা করা নিতান্তই শিশুসুলভ এবং সঠিক তথ্য পরিবেশনার সীমাবদ্ধতা।’