Cross-Border Smuggling: আবারও মালদা এবং জাল নোটের যোগসূত্র (Malda fake currency)। আবারও সেই কালিয়াচকের নাম উঠে এল খবরে। মালদার কালিয়াচক থানা এলাকার বৈষ্ণবনগরের কুম্ভিরা আউটপোষ্টের খোসালপাড়া এলাকায় পুলিশের এক অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ জাল নোট। প্রাথমিক হিসাবে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া নোটের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা।
উদ্ধার হওয়া নোটগুলির মধ্যে রয়েছে ৫০০ টাকার এবং ২০০ টাকার জাল নোট। পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পাঁচশো টাকার জাল নোটের পরিমাণ প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা এবং বাকি এক লক্ষ টাকা দুইশো টাকার জাল নোটে রয়েছে। ঘটনাটি মালদার কালিয়াচক এলাকার দীর্ঘদিনের অপরাধচক্রের একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
অভিযান কোথায় এবং কীভাবে?
পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকার কুখ্যাত অপরাধী রুবেল শেখ, যিনি বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন, তার বাড়ির পাশেই এই বিপুল পরিমাণ জাল নোট উদ্ধার হয়। রুবেল শেখের নাম এই ধরনের অপরাধে আগেও উঠে এসেছে। তবে এবার তার জেলে থাকা অবস্থাতেই তার বাড়ির কাছ থেকে জাল নোট উদ্ধার হওয়ায় পুরো বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, কে বা কারা এত বিপুল পরিমাণ জাল নোট ওই এলাকায় এনেছে এবং কীভাবে তা ছড়ানোর পরিকল্পনা করছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশের ধারণা, বাংলাদেশ থেকে আসা অপরাধচক্র এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কারণ মালদা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সীমান্তপথে জাল নোট পাচারের জন্য কুখ্যাত।
দুশো টাকার জাল নোটের রহস্য
৫০০ টাকার জাল নোট মালদা বা সীমান্ত এলাকায় উদ্ধার হওয়া নতুন কিছু নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় এই ধরনের নোট উদ্ধার হয়েছে। তবে এবারের উদ্ধার অভিযানে দুইশো টাকার জাল নোট পাওয়া যাওয়ায় বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দুশো টাকার জাল নোট এর আগে খুব একটা ধরা পড়েনি।
পুলিশের একজন আধিকারিক জানান, “আমরা সাধারণত ৫০০ বা ২০০০ টাকার জাল নোটের কথা শুনে অভ্যস্ত। কিন্তু এবার ২০০ টাকার জাল নোট পাওয়া গেছে, যা চক্রের নতুন কৌশলের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর পেছনে বড়সড় নেটওয়ার্ক কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে।”
মামলা এবং তদন্তের অগ্রগতি
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে। উদ্ধার হওয়া জাল নোটগুলিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জাল নোটগুলির কাগজ, প্রিন্টিং কৌশল এবং নিরাপত্তার অন্যান্য উপাদান বিশ্লেষণ করা হবে। এর ভিত্তিতেই চক্রের উৎপত্তিস্থল ও সংযোগ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
মালদার দীর্ঘদিনের সমস্যা
মালদা দীর্ঘদিন ধরেই জাল নোটের জন্য পরিচিত। বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা এলাকাগুলি জাল নোট পাচারের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সীমান্তের অপরাধচক্র বারবার এই অঞ্চলকে তাদের কাজের জন্য বেছে নেয়। এলাকাবাসী বলছেন, “জাল নোটের কারণে এখানকার মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। আমরা চাই পুলিশ আরও কঠোর ব্যবস্থা নিক।”
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, “এই ধরণের ঘটনার পেছনে থাকা চক্রগুলোকে নির্মূল করা আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা এলাকায় টহল বাড়িয়েছি এবং সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করেছি।”
এত বড় পরিমাণে জাল নোট উদ্ধার মালদার মতো অঞ্চলের জন্য সতর্কবার্তা। পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলির এখন একসঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করা যায়। তদন্তে নতুন কিছু সূত্র পাওয়া গেলে, তা থেকে আরও বড় অপরাধচক্রের পর্দাফাঁস হতে পারে।