Human Thought: আপনি নানারকম চিন্তাভাবনা করেন প্রত্যেক দিন। কাজ, পরিবার, শরীর, আর্থিক বিষয়…. চিন্তার শেষ নেই। বিশেষ করে আজকের এই স্ট্রেসফুল বিশ্বে। মাথায় নাগাড়ে ছোটাছুটি করে বিবিধ চিন্তা ভাবনা। কত গতিতে এই চিন্তা ভাবনা আপনার মস্তিষ্কের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছোটাছুটি করে তা জানেন?
মানুষের মস্তিষ্কের কাজের গতি নিয়ে এই গবেষণায় উঠে এসেছে যে আমাদের মস্তিষ্ক একসঙ্গে বিশাল পরিমাণ তথ্য প্রক্রিয়া করার পরিবর্তে প্রতি সেকেন্ডে মাত্র ১০ বাইট তথ্য প্রক্রিয়া করে। এই ধীর গতির কারণ হলো, মস্তিষ্ক “সিঙ্গেল ফাইল” পদ্ধতিতে কাজ করে, যেখানে একটির পর একটি তথ্য প্রক্রিয়া করা হয়। যদিও আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো প্রতি সেকেন্ডে গিগাবাইটস পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে, মস্তিষ্ক কেবল প্রয়োজনীয় অংশটুকু বেছে নিয়ে কাজ করে।
গবেষণা অনুযায়ী, এমন ধীর গতির পরও মস্তিষ্ক জটিল সব কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, চোখ বন্ধ করে রুবিক্স কিউব সমাধান করতে মাত্র ১২ বাইট/সেকেন্ড প্রয়োজন হয়। আবার পেশাদার ভিডিও গেম খেলার সময় মস্তিষ্ক ১০ বাইট/সেকেন্ড কাজে লাগায়। কোনো জটিল লেখা পড়ার ক্ষেত্রে এই গতি ৫০ বাইট/সেকেন্ড পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যদিও এটি খুব বেশি সময় ধরে সম্ভব নয়।
বিজ্ঞানীরা এখনো অজনা যে, ৮০ বিলিয়ন নিউরন ও তাদের ট্রিলিয়ন সংখ্যক সংযোগ থাকার পরও মস্তিষ্কের কাজের গতি কেন এত ধীর? গবেষকরা ধারণা করছেন, এর মূল কারণ আমাদের পরিবেশ। আমাদের পূর্বপুরুষরা এমন একটি ধীর গতির পরিবেশে বাস করতেন যেখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন ছিল না। তাই মস্তিষ্কের ধীর কাজ করেও টিকে থাকা সম্ভব ছিল। গবেষকরা আরও বলেন, মস্তিষ্ক কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো বেছে নেয় এবং গুরুত্বহীন অংশগুলো বাদ দেয়। এই বুদ্ধিদীপ্ত প্রক্রিয়া আমাদের জগৎ বোঝার ক্ষমতাকে সহজ করে তোলে।
তবে ভবিষ্যতে যদি মস্তিষ্ককে কম্পিউটারের “প্যারালাল প্রসেসিং” ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত করা যায়, তাহলে এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। কিন্তু মস্তিষ্কের ধীরগতির প্রক্রিয়া হয়তো আমাদের জীবনকে সহজভাবে এবং স্থিরতার সঙ্গে বোঝার জন্য সুযোগ দেয় যা আমাদের একটি বিশেষ সুবিধা হিসেবে কাজ করে।