ইমামি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ফুটবল ক্লাবের জন্য চলতি সিজনটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। কোচ বদলের পর ধীরে ধীরে নিজের ছন্দে ফিরছে দলটি। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্বের চ্যাম্পিয়ন হওয়া, সেই সঙ্গে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল)-এ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জয় পাওয়ার মাধ্যমে তাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে। তবে, একাধিক সমস্যার মাঝেও দলটি তাদের লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে, আর সেই সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলারদের চোট।
সাম্প্রতিক সময়ে দলের খেলোয়াড়রা চোটের কারণে মাঠের বাইরে চলে যাওয়া, ইস্টবেঙ্গলের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারই চোটের শিকার হচ্ছেন, যার মধ্যে অন্যতম স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সাউল ক্রেসপো। চলতি মৌসুমে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে কিছু দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানো এই তারকা ফুটবলারটি গত চেন্নাইয়িন ম্যাচে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন। এই চোটটি তখন দ্রুত নজরে আসে না, তবে পরে তা বড় আকারে সামনে আসে। চোটের কারণে ক্রেসপোকে নিজের চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরতে হয়েছিল, আর তখন থেকেই তার ফেরার জন্য অপেক্ষা শুরু করে দেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।
তবে, এই সমস্ত সমস্যার মধ্যেও ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজনের কথায় কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তিনি সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, দলের চোট সমস্যা এবং সাউল ক্রেসপোর ফেরার বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। কোচের বক্তব্যে জানা গেছে যে, ক্রেসপো তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন এবং খুব শিগগিরই দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন। তবে, কোচ জানিয়েছেন যে সাউল ক্রেসপোকে ইস্টবেঙ্গলের দলে ফেরার জন্য কিছু সময়ের অপেক্ষা করতে হবে।
মাদিহ তালাল এবং সাউল ক্রেসপো: ইস্টবেঙ্গলের প্রধান চোট সমস্যার মুখ
ইস্টবেঙ্গল দলটি যখন কোচ ব্রুজনের অধীনে ধীরে ধীরে নিজেদের মেধা প্রমাণ করছে, তখন দলের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে খেলোয়াড়দের চোট। বিশেষ করে, মাদিহ তালাল এবং সাউল ক্রেসপোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলাররা চোটের শিকার হচ্ছেন। মাদিহ তালাল যিনি একাধিক ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, তার চোটের কারণে এবারের সিজনে তাকে আর মাঠে দেখা যাবে না। দলের এই সমস্যা মোকাবেলা করতে নতুন একজন বিদেশি ফুটবলারকে দলে যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাব।
এদিকে, সাউল ক্রেসপো কিছুটা বেশি সময়ের জন্য মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন, তবে তার চোট গুরুতর ছিল না। তার ভিসা সমস্যা সমাধান হওয়ার পর আশা করা হচ্ছে, তিনি খুব শিগগিরই কলকাতায় ফিরবেন। কোচ ব্রুজন এ বিষয়ে বলেছেন, “সাউল ক্রেসপো তার ভিসা সমস্যা মিটলে, আশা করি ডার্বির আগেই কলকাতায় ফিরে আসবে। আসলে স্পেনে বড়দিনের ছুটি থাকায় ভিসার কাগজপত্র তৈরি হতে একটু সময় নিচ্ছে, তবে আশা করছি আগামী সপ্তাহেই সাউল কলকাতায় চলে আসবে।”
এটি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য একটি বড় সুখবর, কারণ ক্রেসপো যদি দ্রুত ফিরে আসেন, তবে তিনি দলের আক্রমণভাগের অন্যতম বড় অস্ত্র হয়ে উঠবেন। যদিও কোচ জানিয়েছেন যে, ১১ জানুয়ারির কলকাতা ডার্বির আগেই সাউল মাঠে ফিরতে পারবেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়।
সাউল ক্রেসপো: ইস্টবেঙ্গলের মূল খেলোয়াড়
সাউল ক্রেসপো ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডার। তার উপস্থিতি দলের আক্রমণ এবং বিপক্ষের রক্ষণভাগে অনেক বড় প্রভাব ফেলে। তার অসাধারণ পাসিং, দৃষ্টি এবং ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করার ক্ষমতা ইস্টবেঙ্গলের জন্য অপরিহার্য। গত মৌসুমেও সাউল ক্রেসপো দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং তার প্রতিভা দলের আক্রমণকে আরো ধারালো করেছে। সুতরাং, তিনি যদি ডার্বি ম্যাচের আগেই মাঠে ফিরে আসেন, তবে তার ভূমিকা দলের জন্য অনেক বড় হতে পারে।
ক্রেসপোর ফিরলে, ইস্টবেঙ্গল আক্রমণভাগে নতুন জীবন পাবে এবং তার অভিজ্ঞতা দলকে অনেক বেশি সহায়তা করবে। এই স্প্যানিশ ফুটবলারটি দলের জন্য গোল তৈরি করতে সক্ষম, এবং তার দক্ষতার কারণে, তিনি যে কোনো ম্যাচে জয় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
ইস্টবেঙ্গল কোচের ভাবনা
কোচ অস্কার ব্রুজনের মতে, দলের বর্তমানে যে চোট সমস্যা চলছে, তা কিছুটা চাপের মধ্যে রেখেছে দলকে, তবে তিনি আশাবাদী যে দ্রুতই দলের পরিস্থিতি ভালো হবে। কোচ বলেন, “মাদিহ তালালকে এই সিজনে আর পাওয়া যাবে না, কিন্তু তার পরিবর্তে একজন নতুন বিদেশি ফুটবলারকে আমরা দলে নিয়ে আসছি, যার নাম ডার্বির আগেই ঘোষণা করা হবে।”
অস্কারের এই মন্তব্য ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য প্রশান্তির কারণ হতে পারে, কারণ তারা জানেন যে ক্লাবটি সমস্যার সমাধানে কাজ করছে এবং আগামী ডার্বির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ডার্বির জন্য প্রস্তুতি
ইস্টবেঙ্গলের জন্য পরবর্তী বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ১১ জানুয়ারির কলকাতা ডার্বি। এই ম্যাচটি দলটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, দলকে পুরোপুরি প্রস্তুত রাখতে এবং সেরা পারফরম্যান্স দেওয়ার জন্য কোচ এবং খেলোয়াড়রা কঠোর পরিশ্রম করছেন। দলের চোট সমস্যা সত্ত্বেও, সাউল ক্রেসপো ও নতুন খেলোয়াড়দের যোগদান দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং তারা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
ক্রেসপো যদি সঠিক সময়ে ফিরে আসেন, তবে তার উপস্থিতি দলের আক্রমণ ও মাঝমাঠে এক নতুন শক্তি যোগ করবে। এখন সবার দৃষ্টি ১১ জানুয়ারির ডার্বির দিকে, যেখানে ইস্টবেঙ্গল এবং মহু্ন বাগানের মধ্যে জমজমাট লড়াই হবে।