করোনা মহামারীর পর একাধিক দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। এবার, চিনে আবারও একটি নতুন ভাইরাসের উদয় হয়েছে, যা দ্রুত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এই ভাইরাসের নাম হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (HMPV)। চিনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে উদ্বেগ ছড়ালেও, সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন কোনও বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে প্রতিবেশী দেশ হংকং ইতিমধ্যেই ভাইরাসটির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছে এবং এই ভাইরাসটি যাতে অন্যান্য দেশগুলিতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
চিনা উদ্বেগ HMPV সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রস্তুত ভারত
ভারতও এই ভাইরাসের দিকে কড়া নজর রেখেছে। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (এনসিডিসি) ভাইরাসটির বিষয়ে সজাগ রয়েছে। যদিও এনসিডিসি থেকে জানানো হয়েছে যে, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, তবুও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এর সঠিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকছেন। ভাইরাসটির উপসর্গ এবং বিস্তার বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনও গবেষণালব্ধ তথ্য প্রকাশিত হয়নি, তবে সংশ্লিষ্ট দেশের পরিস্থিতি এবং পরবর্তী উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
ভারতে কেরল স্বাস্থ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ এবং অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য বাড়ির বাইরে বেরোনোর সময় মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কেরল সরকার সাধারণ জনগণকেও জনবহুল জায়গা বা রাস্তায় বেরোনোর আগে সতর্ক থাকতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে। এই ভাইরাসের আক্রমণ কীভাবে এবং কিভাবে ছড়াতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়, কিন্তু অতিরিক্ত সতর্কতা গ্রহণ করা দেশের জন্য এবং জনগণের জন্য নিরাপদ হতে পারে।
এই ভাইরাসের প্রকৃতি এবং সংক্রমণ হার এখনো পুরোপুরি জানা না গেলেও, বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, এইচএমপিভি সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তবে ভাইরাসটি শুধু মানুষের মধ্যে বিস্তার লাভ করছে না, এটি প্রকৃতিতে বা অন্য প্রাণীদের মধ্যে কীভাবে ছড়ায় তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদিও এই ভাইরাসের প্রভাব এখনো খুব বেশি না হলেও, বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের মতো দ্রুত ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
কেউ টোটো চালক, কেউ শ্রমিক, গোপনে চলত জেএমবির কার্যকলাপ, গ্রেফতার বাংলাদেশি জঙ্গিরা
এদিকে, ভারতের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সীমান্তে যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেশে যেসব বিমান বা অন্যান্য যানবাহন আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করছে, সেগুলিতে যাত্রীদের সঠিকভাবে স্ক্যান করার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য দেশে ভাইরাসটির প্রসার এবং এর সংক্রমণের কিভাবে প্রভাব ফেলছে, সে বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তুরবাতে সেনাবাহিনীর বাসে বিস্ফোরণ, দায় স্বীকার বালোচ লিবারেশন আর্মির
এখনও পর্যন্ত করোনার মতো কোনো মহামারি ছড়ানোর সম্ভাবনা না থাকলেও, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, যেকোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সম্ভাব্য বিস্তার ঠেকাতে সঠিক সময়ে সতর্কতা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একমাত্র উপায় হল সচেতনতা এবং আগাম পদক্ষেপ গ্রহণ।