ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) এই মরশুমে, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি (NorthEast United FC) এমন এক ফুটবলার পেয়েছে, যিনি শুধু দলের আক্রমণভাগকে শক্তিশালীই করেননি, বরং প্রতিপক্ষের রক্ষণের জন্য এক বিপজ্জনক অস্ত্র হয়ে উঠেছেন। তিনি হচ্ছেন মরক্কো (Morocco) থেকে আসা ফরোয়ার্ড আলাদিন আজারেই (Alaeddine Ajaraie)। তাঁর উপস্থিতি দলটির খেলার ধারাকে অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে। এখন নর্থইস্টের জন্য বড় ম্যাচে তাঁর ভূমিকা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ মহামেডান এসসির (Mohammedan SC) বিরুদ্ধে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন এই বিদেশি ফুটবলাররা (Footballer) ।
মহামেডানের বিরুদ্ধে নামার আগে একী মন্তব্য করলেন বেনালি?
আজারেই আইএসএলে যাত্রা শুরু হয়েছিল গত মরশুমে। সেখান থেকে তিনি ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতা এবং গোল করার ক্ষমতা সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছেন। তবে এবারের মরশুমে তিনি তাঁর খেলাটা এক নতুন স্তরে নিয়ে গেছেন। ১৩ ম্যাচে ১৪ গোল করে তিনি এখন শুধুমাত্র নর্থইস্ট ইউনাইটেডের সেরা গোলদাতা নন বরং লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। এর মাধ্যমে তিনি দলের আক্রমণভাগে এক অবিস্মরণীয় দৃষ্টি আকর্ষণকারী চরিত্র হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর গোলগুলো দলের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান এবং তাঁর দক্ষতার কারণে নর্থইস্টের সামগ্রিক পারফরম্যান্সও বিশেষভাবে উন্নত হয়েছে।
ডার্বি নিয়ে মুখ খুললেন সবুজ-মেরুন অধিনায়ক, জানুন
এখন প্রশ্ন হল, আজারেই কীভাবে এই সফলতার পথ খুঁজে পেয়েছেন? তাঁর খেলার ধরন বেশ মারাত্মক। তিনি একদিকে যেমন সোজাসুজি গোল করার ক্ষমতা রাখেন, তেমনি তিনি দারুণ ফুটবল মেধার অধিকারী। তাঁর দ্রুত গতির ড্রিবলিং এবং সঠিক সময়ে সঠিক পাসের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের রক্ষণের মধ্যে সৃষ্ট দুর্বলতার সুযোগ নেন। তাঁর শট নেয়া, গোলের পরিস্থিতিতে উপস্থিতি এবং বক্সের ভিতরে তার নিখুঁত গোল করার ক্ষমতা এক কথায় অসাধারণ।
এছাড়া, নর্থইস্ট ইউনাইটেডে আজারেইয়ের অবদান শুধু গোলেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি যে কোনো ম্যাচে তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্দান্ত যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং দলের আক্রমণকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যান। তাঁর গতি এবং প্রতিপক্ষের রক্ষণের বিরুদ্ধে তাঁর ধৈর্য তাঁকে এক অনন্য ফুটবলার হিসেবে তুলে ধরেছে। এই কারণেই দলের কোচ পেদ্রো বেনালি আজারেইকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন এবং তাঁর উপর ভরসা রাখেন।
মোহনবাগানের কাছে পরাজিত হয়ে কী বললেন হায়দরাবাদ কোচ?
এখন পর্যন্ত নর্থইস্ট ইউনাইটেড ২৯টি গোল করেছে, যার মধ্যে ১৪টি গোল আজারেইয়ের। এটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে, দলটির গোল করার অধিকাংশ দায়িত্ব এখন তাঁর কাঁধে। তাঁর গোল করার ধারাবাহিকতা এবং সময়মতো দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে তাঁকে দলের একটি অপরিহার্য সদস্য করে তুলেছে।
তবে তাঁর জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে আগামী শুক্রবার, যখন নর্থইস্ট ইউনাইটেড মুখোমুখি হবে কলকাতার মহামেডান এসসির। এই ম্যাচটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ মহামেডান এসসি তাদের ডিফেন্ডারদের মাধ্যমে আজারেইকে আটকে রাখার চেষ্টা করবে। কিন্তু মহামেডান কোচ আন্দ্রে চেরনিশভের জন্য এটি এক কঠিন কাজ হতে চলেছে। আজারেই’কে আটকানোর জন্য এক বিশেষ পরিকল্পনা প্রয়োজন হবে, কারণ তাঁর গতিশীলতা এবং গোল করার ক্ষমতা বিরাটভাবে বিপজ্জনক।
এফসি গোয়ায় ফিরলেন এই ভারতীয় ফরোয়ার্ড, জানুন
মহমেডান এসসির প্রথম আইএসএল ম্যাচেই তারা নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে কঠিন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল। তবে সেই ম্যাচের শেষ মুহূর্তে, আলাদিন আজারেই তাঁর অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়ে মহমেডান রক্ষণের মধ্যে ফাঁক তৈরি করে গোল করেছিলেন। এরপর থেকে আজারেই একের পর এক দুর্দান্ত গোল করে গেছেন, এবং তাঁর খেলার মান আরও উন্নত হয়েছে। তাঁর সাম্প্রতিক গতি এবং স্কোরিং ক্ষমতা দেখলে, সাদা-কালো ব্রিগেডের ডিফেন্ডারদের জন্য তাকে আটকানো এক কঠিন কাজ হতে চলেছে।
বছরের প্রথম জয়ে খুশি দেবাশিস দত্ত, দিলেন ডার্বির আপডেট
আলাদিন আজারেইর খেলার শক্তি এবং তাঁর গোল করার ক্ষমতা যে কোনো দলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। মহামেডান এসসি’র ডিফেন্ডারদের জন্য এটাই এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হবে যে, তারা তাঁকে খুঁজে বের করে আটকাতে পারবে কি না। কোচ চেরনিশভকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য অতিরিক্ত প্রস্তুতি নিতে হবে। আজ নর্থইস্ট ইউনাইটেডের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ, যদি তারা নিজেদের সেরা খেলোয়াড়ের উপর ভরসা রেখে খেলতে পারে। আর সেই সেরা খেলোয়াড়টি অবশ্যই আলাদিন আজারেই, যিনি এক একক পারফরম্যান্স মধ্যে দিয়ে কলকাতা ময়দানের এই প্রধানের বিরুদ্ধে দলের জন্য বড় জয় এনে দিতে সক্ষম হবে।