‘লজ্জা’র নায়িকা তসলিমার নিশানায় শেখ হাসিনা

বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin) সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তসলিমা অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনা তার…

Taslima Narsin is worried about the secular government in Bangladesh despite the fall of Hasina's government, 'হাসিনার দুঃশাসনের শেষ' লিখলেও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার নিয়ে আশঙ্কিত তসলিমা

বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin) সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তসলিমা অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনা তার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসংখ্য ক্ষতি করেছেন এবং তার প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন।

পৈত্রিক সম্পত্তি ও দূতাবাসের বাধা
তসলিমা নাসরিন তার পোস্টে উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি তার পৈত্রিক সম্পত্তির কোনো অংশ পাননি। দেশে ঢুকতে না পারায়, তসলিমা তার বোনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন। কিন্তু বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সেই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ডকুমেন্ট সত্যায়িত করতে দেওয়া হয়নি। তসলিমার অভিযোগ, শেখ হাসিনার নির্দেশে বা তার প্রতি দূতাবাসের ভয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেও কোনো সাড়া পাননি বলে তিনি জানিয়েছেন।

   

লেখকের প্রতি নিষ্ঠুরতা ও বই নিষিদ্ধকরণ
তসলিমা আরও অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনা তার আত্মজীবনী “আমার মেয়েবেলা” নিষিদ্ধ করেছিলেন। এর কারণ সম্পর্কে তসলিমার কোনো ধারণা নেই। তিনি দাবি করেন, হাসিনা অদ্ভুত এক হিংসা, ঘৃণা ও দম্ভে আচ্ছন্ন ছিলেন। তার ভয়ে প্রকাশকরা বাংলাদেশে তসলিমার বই প্রকাশ করতেন না। কারণ, তারা ভাবতেন, বই প্রকাশ করলে তাদের হেনস্থা করা হবে।

ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও সহানুভূতির অভাব
তসলিমা উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন না। নিজের বাবার প্রতি যে পরিমাণ আবেগ তিনি দেখাতেন, অন্যের বাবা বা পরিবারের প্রতি তেমন সম্মান বা সহানুভূতি দেখাতেন না। তসলিমা অভিযোগ করেন, যখন তার বাবা মৃত্যুশয্যায় ছিলেন, তিনি দেশে ফিরে বাবাকে শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তাকে দেশে ফিরতে বাধা দেন এবং তার অনুরোধ উপেক্ষা করেন।

রাজনৈতিক প্রসঙ্গ ও বিদ্বেষ
তসলিমা নাসরিন দাবি করেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনার অনেক বিষয়ে সমর্থন করেছেন। তিনি চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা নির্বাচন জিতুন এবং বাহাত্তরের সংবিধান ফিরিয়ে আনুন। খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী তাকে নির্বাসন দণ্ড দিয়েছিলেন, অথচ হাসিনা তার প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখাননি। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ছিলেন প্রতিশোধপরায়ণ এবং আত্মম্ভরিতায় আচ্ছন্ন।

তসলিমার অবস্থান ও প্রতিবাদ
তসলিমা নাসরিন আরও বলেন, শেখ হাসিনার আচরণের প্রতি কোনো প্রতিশোধ তিনি নিচ্ছেন না। বরং আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে, তার প্রতিবাদ করছেন। তিনি আশা করছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিরা ঐক্যবদ্ধ হবে এবং সামনে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অংশগ্রহণ করবে।
তসলিমা নাসরিনের এই বক্তব্য নতুন করে রাজনীতিক এবং সমাজের বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শেখ হাসিনার প্রতি তার অভিযোগ শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সমাজে ক্ষমতার ব্যবহার নিয়ে একটি গভীর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।