বিহারের (Bihar) মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) বৃহস্পতিবার একটি রহস্যময় প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছেন, যখন তিনি লালু প্রসাদ যাদবের “দরজা খোলা” মন্তব্যের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। লালু যাদব সম্প্রতি বলেছিলেন যে, ভারতীয় জনতা দল (রাষ্ট্রীয় জনতা দল, আরজেডি) নীতীশ কুমারের জন্য তাদের দরজা খোলা রেখেছে, এবং কুমারকেও তার দরজা খুলে দেওয়া উচিত, যাতে দুই পক্ষের মানুষের মধ্যে চলাচল সহজ হয়।
এই মন্তব্যের পরে, সাংবাদিকরা নীতীশ কুমারের কাছে লালু যাদবের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে, নীতীশ কুমার তার হাত জোড় করে হেসে, শুধুমাত্র এক বাক্যে বলেছিলেন, “ক্যাঁ বল রাহে হ্যায়?” (তুমি কী বলছো?)। তারপর আর কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেননি তিনি।
#WATCH | Patna: Bihar CM Nitish Kumar reacts on being asked about Lalu Prasad Yadav’s statement. pic.twitter.com/6Gxb9iOZgP
— ANI (@ANI) January 2, 2025
লালু যাদবের এই মন্তব্যটি বিহারে অনেক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি করেছে এবং তা থেকে একাধিক জল্পনা চলছে। রাজ্যের রাজনীতিতে দুই নেতার সম্পর্কের নানা ওঠাপড়া এবং ইতিহাসকে সামনে রেখে, এই বক্তব্যটি নতুন জোটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। বিহারের রাজনীতিতে নীতীশ কুমার ও লালু যাদবের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ককে প্রায়শই “বড় ভাই, ছোট ভাই” (বড় ভাই, ছোট ভাই) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। অতীতে, একাধিক বার তারা একসাথে জোটবদ্ধ হয়ে রাজ্যের শাসন করেছেন।
তবে, গত কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে তাদের সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু লালু যাদবের এই নতুন মন্তব্যের পর, ফের দুই নেতার মধ্যে কোনও সমঝোতা বা জোট গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে আলোচনা শুরু হয়েছে।
নীতীশ কুমার এখনও এ বিষয়ে কোনও স্পষ্ট অবস্থান নেননি, কিন্তু তার এই প্রতিক্রিয়া অনেকের কাছে এক ধরনের কৌশলগত উত্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে। নীতীশ কুমার রাজনৈতিকভাবে এক অভিজ্ঞ নেতা, এবং তিনি কখনও সরাসরি কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে, কৌশলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পছন্দ করেন। তার হাস্যকর এবং সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, হয়তো এই বিষয়টির উপর আলোচনা চলতে রাখতে চায়, যাতে আরও সময় পাওয়া যায়।
এখন প্রশ্ন উঠছে, নীতীশ কুমার কি লালু যাদবের এই “দরজা খোলা” প্রস্তাব গ্রহণ করবেন? অথবা, তার রাজনৈতিক কৌশল এই পরিস্থিতিতে কেমন হবে? কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই মন্তব্যটি শুধু বিহারে নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর বিরুদ্ধে বিরোধী শক্তি একত্রিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে।
এই পরিস্থিতি বিহারের রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে এবং আগামী দিনগুলিতে নীতীশ কুমার এবং লালু যাদবের মধ্যে সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে আরও আলোচনার সৃষ্টি হবে, যা রাজ্যের রাজনৈতিক চিত্রের দিক পরিবর্তন করতে পারে।