দীর্ঘ আট বছর পর সন্তোষ ট্রফির (Santosh Trophy) শিরোপা জয় করল বাংলা ফুটবল দল (Bengal Football Team) । আর এর সঙ্গেই রেকর্ড ৩৩তম খেতাবের অধিকারী হল এই দল। বর্ষবরণের রাতে হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে কেরালাকে (Kerala) ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাংলার (Bengal) ফুটবল দলের কোচ ও ফুটবলাররা শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে গেছেন। বাংলার এই ঐতিহাসিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তিনি এই জয়কে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়েছেন এবং দলের ফুটবলার (Footballer) ও কোচকে (Coach) অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রকাশ্যে এল বড় আপডেট, আইপিএলে ব্যাট-বল হাতে মাঠে নামবেন রিঙ্কু?
এবারের সন্তোষ ট্রফি ফাইনালটি ছিল নিঃসন্দেহে উত্তেজনাপূর্ণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলে। কেরালা এবং বাংলা, উভয় দলই বেশ কিছু গোলের সুযোগ পেয়েছিল, তবে গোলমুখ খোলা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে ম্যাচের শেষের দিকে, অতিরিক্ত সময়ে, রবির দুরন্ত গোলেই বাংলার জয় নিশ্চিত হয়।
একী কাণ্ড! এফসি গোয়ার ফুটবল ইতিহাসে বাগানের প্রাক্তন কোচ?
রবি হাঁসদার এই গোল ছিল না শুধু ম্যাচের একমাত্র গোল, বরং এটি সন্তোষ ট্রফির ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক। তাঁর এই গোলের মাধ্যমে বাংলা দলের জন্য গড়া হয় এক অসাধারণ ইতিহাস। রবির এই একমাত্র গোল কেরালাকে ঠেকিয়ে রেখে বাংলা দলকে বিজয়ের শিখরে নিয়ে যায়। ১২ গোল করে তিনি সোনার বুটও জিতে নেন, যা সন্তোষ ট্রফির ইতিহাসে একটি বড় রেকর্ড। এর আগে কখনোই কোন ফুটবলার এক মরসুমে ১২ গোল করেননি, আর রবির এই কৃতিত্ব পুরানো রেকর্ডগুলিকেও ছাড়িয়ে গেছে। মহম্মদ হাবিবের রেকর্ড ভেঙে রবিই এখন সন্তোষ ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
অপেক্ষার অবসান, কেরালাকে হারিয়ে সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন বাংলা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “৮ বছরের অপেক্ষার পর সন্তোষ ট্রফি ফিরিয়েছে বাংলা। ৩৩তম খেতাব জিতে সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। অবিশ্বাস্য জয়। রবির দুরন্ত গোলে যা নিশ্চিত হয়ে যায়।” তিনি আরো বলেন, “বাংলার ফুটবল এখন ভারতীয় ফুটবলের মধ্যমণি, এবং এই জয় বাংলা ফুটবলের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।”
After an 8-year wait, Bengal football begins 2025 on a triumphant note by reclaiming the prestigious Santosh Trophy for a record-breaking 33rd time!
This incredible victory was sealed by the sensational strike from Robi Hansda, who also earned the Golden Boot with a stunning…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 31, 2024
এছাড়া, বাংলা দলের কোচ সঞ্জয় সেন এবং অধিনায়ক চাকু মান্ডিকেও তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই পোস্টে শুধু দলের কোচ-অধিনায়ক নয়, সমস্ত ফুটবলারদের জন্যই উচ্ছ্বাস ছিল। ৩৩তম সন্তোষ ট্রফি জয় শুধু বাংলার ফুটবল ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নয়, বরং বাংলার ফুটবলের গৌরবময় পুনর্জন্মের প্রতীক।
বাংলার ফুটবল দল এই জয়ের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে, দীর্ঘ সময় পরেও তারা সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম। সঞ্জয় সেনের নেতৃত্বে এবং ফুটবলারদের কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ বাংলার ফুটবল দলে নতুন এক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দলটির খেলোয়াড়রা একত্রে কঠোর পরিশ্রম করে এই সাফল্য অর্জন করেছেন, যা সকল বাঙালির জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।
চমকে উঠবেন মেরিনার্সরা! নতুন বছরে বাগানের লক্ষ্য এমন কী?
এবারের সন্তোষ ট্রফিতে রবির ১২ গোল ছিল সত্যিই এক অভাবনীয় কৃতিত্ব। রবির মতো আরও অনেক খেলোয়াড় যদি বাংলার ফুটবলে উঠে আসে, তবে ভারতীয় ফুটবল দুনিয়ায় বাংলা আরও একবার নিজেকে শীর্ষে নিয়ে যাবে, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। বাংলার ফুটবল অনুরাগীরা এই সাফল্যের মূহুর্তে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। তাঁদের জন্য এই জয় একটি অবিস্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে।
হায়দরাবাদের এই তরুণ ডিফেন্ডারের দিকে নজর আইজল এফসির
এই বিজয়ের সঙ্গে এক নতুন রূপে প্রবাহিত হল বাঙালির ফুটবল সংস্কৃতি। কলকাতার ফুটবল মঞ্চ থেকে, বাংলার ফুটবল দল আবারও একবার বিশ্বের মঞ্চে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে প্রস্তুত। বিজয়ী বাংলা ফুটবল দল বুধবার রাতে কলকাতায় ফিরবে, এবং তাদের জন্য শহরে এক জমকালো বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলার ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ফোনে কোচ সঞ্জয় সেনকে উদ্বুদ্ধ করে বলেছিলেন , “চ্যাম্পিয়ন হয়ে দল ফিরলে আমি নিজে বিমানবন্দরে গিয়ে তোমাদের স্বাগত জানাব।” এই ধরনের দৃঢ় মনোভাব এবং উৎসাহ বাংলার ফুটবলারদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছিল, তা স্পষ্ট।