শেষ দিনে সঞ্জয় সেনের ছাত্রদের ভরসাতেই স্বপ্ন দেখছে বঙ্গবাসী, পাশে ক্রীড়ামন্ত্রী

বাংলার ফুটবল (Bengal Football) ইতিহাসে সন্তোষ ট্রফি একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ৩২ বার জাতীয় ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন (National Football Champion) হওয়া বাংলার জন্য এই…

Sanjoy Sen and Bengal Football Team Qualify to Santosh Trophy Final beat Services by 4-2 goal

বাংলার ফুটবল (Bengal Football) ইতিহাসে সন্তোষ ট্রফি একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ৩২ বার জাতীয় ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন (National Football Champion) হওয়া বাংলার জন্য এই ট্রফি ছিল সাফল্যের এক বিশেষ প্রতীক। কিন্তু গত কয়েক বছরে বাংলার ফুটবল ভক্তদের জন্য একটি বড় দুঃখের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সন্তোষ ট্রফিতে (Santosh Trophy) তাদের খরা। ২০১৬-১৭ সালে শেষবার বাংলার সন্তোষ ট্রফি জয় হয়েছিল। তারপর থেকে একে একে বহু আসর পার হয়েছে, কিন্তু বাংলার ভাগ্য একটুও বদলায়নি। গত মরসুমে বাংলাকে প্রাথমিক রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল, যা ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে বাংলাকে এক ধরনের অবনতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

২০২৪ সালে ক্লাব ফুটবলে সেরা পাঁচ কোচের তালিকায় ইস্ট-মোহনের দুই প্রাক্তন

   

এতদূর এসে সঞ্জয় সেনের (Sanjoy Sen) নেতৃত্বে বাংলা দল এখন আবার সম্মান ও গৌরব ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখছে। সঞ্জয় সেন, যিনি বাংলার ফুটবলে এক সময়কার সফল কোচ, বর্তমানে দলের দায়িত্ব নিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছেন। সঞ্জয়ের হাত ধরে বাংলার দল এখন নতুন এক মনোবল নিয়ে মাঠে নেমেছে, যা তাদের ফিরে যাওয়ার পথ সুগম করতে সাহায্য করছে।

বাংলার ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও দলকে সমর্থন জানাতে কোন ফাঁক রাখছেন না। তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি জিততেই হবে। শুধু তাই নয়, ফাইনালে দলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হায়দরাবাদে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি ফোনে কোচ সঞ্জয় সেনকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, বলেছেন, “চ্যাম্পিয়ন হয়ে দল ফিরলে আমি নিজে বিমানবন্দরে গিয়ে তোমাদের স্বাগত জানাব।” এই ধরনের দৃঢ় মনোভাব এবং উৎসাহ বাংলার ফুটবলারদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

বাংলায় হোক ডার্বি ম্যাচ, মুখ খুললেন সৃঞ্জয় বসু

এই ফাইনালে বাংলার দলের আত্মবিশ্বাসও অনেক বেশি। দলটি সেমিফাইনালে সার্ভিসেসকে ৪-০ গোলে পরাজিত করেছে, যা তাদের শক্তিশালী অবস্থানকে আরও সুস্পষ্ট করেছে। দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ই ভাল ফর্মে রয়েছে এবং নিজেদের কৃতিত্বে আত্মবিশ্বাসী। দলের সেরা গোলদাতা রবি হাঁসদা, যিনি এই মুহূর্তে ১১ গোল করেছেন, তাঁর নেতৃত্বে বাংলা দল ফাইনালেও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ কেরলাকে পরাজিত করার আশা করছে। রবি হাঁসদা ছাড়াও নরহরি শ্রেষ্ঠা, যে তাঁর সাত গোল নিয়ে দলের জন্য বড় অবদান রেখেছে, তার সামর্থ্যও দলের জন্য আশার আলো।

আপাতত স্থগিত কলকাতা ডার্বি, মতামত দিলেন দেবাশিস দত্ত

বাংলার কোচ সঞ্জয় সেন জানিয়েছেন, কেরালার দল যথেষ্ট শক্তিশালী, তবে বাংলা দলও প্রস্তুত। দক্ষিণী এই রাজ্যের কয়েকজন খেলোয়াড় ইতিমধ্যে কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলেছে, তাই তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকা জরুরি, তবে তারা ভয় পাবে না। সঞ্জয় সেনের মতে, দলের প্রত্যেকটি সদস্য খেলার জন্য প্রস্তুত এবং ফাইনালে তারা ১০০% পারফরম্যান্স দিতে প্রস্তুত।

মুম্বইয়ের বিপক্ষে গোল করে নিজের লক্ষ্য স্থির করলেন নিকসন

রাজ্য ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও পুরোপুরি নিশ্চিত যে বাংলার ফুটবল দল এবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরবে। তিনি শুধু সঞ্জয় সেনকেই প্রশংসা করছেন না, বরং তাঁর কথায়, সঞ্জয় সেন বর্তমান সময়ে বাংলার সেরা কোচ। এমনকি, তাঁর বড় দলের কোচিংয়ে সুযোগ পাওয়ারও কথা উঠে এসেছে। মন্ত্রী সঞ্জয় সেনকে আশ্বস্ত করে বলেন, “বাংলা দল যতটুকু কঠিন অবস্থাতেই পড়ুক, তাদের পাশে আছি এবং এই ফাইনাল জয় তাদের সঙ্গেই হবে।”

ইংল্যান্ডের ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হলেন চেন্নাইয়িন প্রাক্তন তারকা

বাংলার অধিনায়ক চাকু মাণ্ডি, যিনি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার সাথে আলোচনা করে মন্ত্রী জানিয়ে দেন, বাংলার ফুটবল দলকে একযোগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য তিনি পুরোদমে সমর্থন দিয়ে যাবেন। মন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দলের পাশে রয়েছেন এবং দলের প্রতি তার পুরো সমর্থন রয়েছে।

এখন সবার চোখ ফাইনালের দিকে। বাংলার ফুটবলাররা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তারা এবার গৌরব ফিরিয়ে আনবে। সন্তোষ ট্রফির খরা কাটিয়ে বাংলা ফিরবে তাঁর পুরনো ঐতিহ্য এবং শ্রেষ্ঠত্বের দিকে।